ব্রিটিশ পুলিশ কমিশনার

হাইস্ট্রিট ব্যাংকগুলো স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ গ্রাহকদের সাথে গুরুতর প্রতারণার জন্য দায়ী

জনৈক পুলিশ কমিশনার যুক্তরাজ্যের প্রধান হাইস্ট্রিট ব্যাংকসমূহের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের সাথে নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। তার অভিযোগ হচ্ছে এসব ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর সংঘবদ্ধ অপরাধ সংঘটন করে বিশেষভাবে আইন থেকে বাঁচতে স্বাক্ষর জাল করে এবং বাড়িঘর পুনঃ দখল করে নেওয়ার মাধ্যমে বিগত এক দশক যাবৎ বিলিয়ন পাউন্ড হাতিয়ে নিয়েছে।’

‘থেমস্ ভ্যালী’র পুলিশ ও ক্রাইম কমিশনার এন্থনী স্ট্যানসফেল্ড বলেন যে, ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সীর উচিত অবিলম্বে একটি ফৌজদারি তদন্ত পরিচালনা করা এবং এটা একটি জাতীয় কেলেংকারী ও হয়রানি’ যা অতীতে কখনো ঘটেনি।
মিঃ স্ট্যানসফেল্ড আরো বলেন যে, তিনি স্বাক্ষর জালিয়াতির প্রমাণাদি পর্যালোচনা করেছেন, যা এনসিএ-এর মহাপরিচালক লীন ওয়েলস-কে সরবরাহ করা হয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসে।
চলতি সপ্তাহে ব্যাংক প্রতারণার কথিত শিকারদের প্রতি প্রেরিত একটি চিঠিতে মিঃ স্ট্যানসফেল্ড বলেন যে, অপরাধমূলক কর্মকান্ডের প্রমাণ ‘স্পষ্ট ও বাধ্যকরী’।
তিনি বলেন, ‘বহু মানুষের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, বহু পরিবার উচ্ছেদ হয়েছে, লোকজন দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। কমপক্ষে গত এক দশক যাবৎ এটা ঘটছে, সম্ভবতঃ ব্যাপক হারে।গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতি বিলিয়নে দাঁড়াবে।’
হাউস অব কমন্স ট্রেজারী সিলেক্ট কমিটি গত বছর জুলাই মাসে ‘এনসিএ’ এবং ‘ফিনান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি’-কে স্বাক্ষর জালিয়াতি তদন্তের জন্য বলেছে।
১১ মাস পর, কিছু দাবিকৃত ভিকটিম এ ক্ষেত্রে অগ্রগতির ব্যাপারে হতাশা ব্যক্ত করেন। অভিযোগগুলো ঋণ সংগ্রহ ও পুনঃদখলের জন্য ডকুমেন্ট জালিয়াতি কেন্দ্রিক। অনেক ভিকটিম এই মর্মে অভিযোগ করেছেন যে, ব্যাংক যে সব ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করেছে সেগুলোতে জাল স্বাক্ষর রয়েছে।
ভিকটিমদের সহায়তার জন্য গত বছর প্রতিষ্ঠিত ‘ব্যাংক সিগনেচার ফরজারি ক্যাম্পেইন ‘বিভিন্ন ডকুমেন্টে এমন অনেক স্বাক্ষর পেয়েছে, যেগুলো এক ব্যক্তির করা স্বাক্ষর বলে দাবি করা হলেও একটি অপরটির সাথে মেলে না।
ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটি গত বছর এসব অভিযোগের ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠে। জুন মাসে তৎকালীন এফসিএ প্রধান এন্ড্রু বেইলীর নিকট থেকে প্রমাণাদির বিষয়ে জানতে পারে, যিনি বলেন যে, তিনি এ বিষয়ে সচেতন রয়েছেন।
কমিটির সদস্য ও রক্ষণশীল দলের এমপি স্টিভ বেকার জানান যে, ইতোপূর্বে তিনি ব্যাংক কর্মচারীদের বাড়ি পুনঃদখলের কর্তৃত্বায়নের ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করার প্রমাণ পেয়েছেন, যদিও এটা করার অধিকার তাদের নেই।
তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন স্বাক্ষর প্রদর্শন করেছি যাতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, কিছু প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার দলিলপত্রে কোন এক ব্যক্তি সবগুলো স্বাক্ষর দিয়েছেন। পুনঃদখলের বিষয়টি ন্যায়সংগত হোক বা না হোক, এতে প্রতীয়মান হয় যে, এ থেকে প্রতারণামূলক লেনদেন হয়েছে।
তিনি মিঃ বেইলীকে প্রশ্ন করেন: ‘আপনি কি জানেন যে, এ ধরনের কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে? যদি ঘটে থাকে, তবে আপনারা কী ব্যবস্হা নিয়েছেন?’
মিঃ বেইলী, যিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড – এর বর্তমান গভর্নর, বলেন: ‘আমি এ ব্যাপারে অবগত আছি। হ্যাঁ, এ নিয়ে আলোচনা হবে। যদি আপনি আমাদের নিকট প্রমাণ নিয়ে আসেন, আমরা তা দেখবো।’
যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে এ ধরণের জালিয়াতির মামলাগুলোতে হাজারো ভিকটিমের সাথে মাল্টিবিলিয়ন ডলারে মিমাংসা হচ্ছে।
এনসিএ-এর জনৈক মুখপাত্র বলেন: ‘আমরা এফসিএ এবং এসএফও’র সাথে বাস্তব পরিস্হিতি মূল্যায়ন করছি, এ বিষয়ে একটি ফৌজদারি কিংবা রেগুলেটরী তদন্তের যুক্তিসমূহ বিবেচনা করা যায় কি-না, তা আমরা বিশদভাবে মূল্যায়ন করছি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button