‘খ্যাতিমান হওয়ার পরেই বরং বেশি বর্ণবাদের শিকার হয়েছি’
খ্যাতিমান হওয়ার আগের চেয়ে বরং গত পাঁচ বছরেই বেশি বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন নাদিয়া হোসাইন। সাবেক গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া বর্ণবাদ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এমন তথ্যই জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ব্রিটেনে বর্ণবাদের চিত্র তুলে ধরেন এভাবেই।
গত ২৫ মে পুলিশের হাতে নিহত হওয়া জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ চলছে। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে মানুষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাদিয়া হোসাইন তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ৫ লাখের বেশি ফলোয়ারকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, আপনি বর্ণবাদের শিকার হননি, তার মানে এই নয় যে এটার অস্তিত্ব নেই, এটা আছে। আমি জীবনের যে কোনো সময়ের চেয়ে গত পাঁচ বছর টেলিভিশন ও ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সময় আরো বেশি বর্ণবাদের মুখোমুখি হয়েছি। এই জঘন্য চর্চা বন্ধ করার সময় এসেছে।
তবে নিজে কী ধরনের বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি নাদিয়া। তবে পোস্টের ক্যাপশনে #কলরেসিজমআউট হ্যাশট্যাগ যুক্ত করেছেন।
সোস্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য নাদিয়ার অনেক ফলোয়ার ও তারকা বন্ধুরা মন্তব্য করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এদেরই একজন সংগীতশিল্পী ড্যানি মিনোগু মন্তব্যে লিখেছেন, অনুগ্রহ করে যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা চালিয়ে যান এবং সেটি বন্ধ করার দাবি তুলতে থাকুন। টিভি ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা আপনার সঙ্গে এমন আচরণ করে শুনে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি আপনাকে জানাতে চাই, আপনার অবস্থানকে সমর্থন করতে এবং এ অবস্থার পরিবর্তন করতে সহায়তা করার জন্য আমি আপনার সঙ্গে আছি।
ফুড ব্লগার ও কুক জর্জিয়া হ্যাডেন মন্তব্যে বলেছেন, সহমত বন্ধু।
বর্ণবাদ নিয়ে এটাই নাদিয়ার প্রথম প্রতিবাদ নয়। এর আগেও তিনি এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। ২০১৬ সালে নাদিয়া বলেছিলেন, বর্ণবিদ্বেষী নির্যাতন নিপীড়ন তার জীবনের অংশ হয়ে গেছে। এটা এখন তার কাছে একটি স্বাভাবিক প্রত্যাশিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
রেডিও ৪ এর উপস্থাপক ক্রিস্টি ইয়াংয়ের সঙ্গে কথা বলার সময় নাদিয়া বলেছিলেন, আমার জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়েছিল এবং আমাকে ধাক্কা দেয়া হয়েছিল। আমি মনে করি, এটা এখন আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। আমি এটা প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, আমি ধরেই নিই, আমাকে ধাক্কা দেয়া হবে বা বাজে কথা বলা হবে। কারণ এটা তো ঘটছে। এমন ঘটনা বছরের পর বছর ধরে ঘটে আসছে।
এগুলো তিনি কীভাবে মোকাবেলা করেন সেটিও ব্যাখ্যা করেছিলেন নাদিয়া। তিনি বলেন, আমি মনে করি এমন ঘটনার পর চুপ করে থাকার মধ্যে মর্যাদাবোধ আছে। আমি যদি এমন নেতিবাচক ঘটনার প্রতিশোধ নিই তাহলে আমিও এমন নেতিবাচকতার সঙ্গে শামিল হয়ে গেলাম। কেউ যদি এমন নেতিবাচক আচরণ করেন, তবে তার সঙ্গে আমার ওইরকম আচরণ করার দরকার নেই। আমার বরং উত্তম মানুষ হওয়া দরকার।