ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ভাড়াটে উচ্ছেদ নিষেধাজ্ঞা আরো ২ মাস বাড়লো
যুক্তরাজ্য সরকার ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে উচ্ছেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো ২ মাস বৃদ্ধি করেছে, যাতে লকডাউনের সময় ভাড়া পরিশোধে হিমশিম খাওয়া ভাড়াটেরা অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রিটিশ হাউজিং মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেন, আগস্টের শেষ নাগাদ পর্যন্ত আদালতে উচ্ছেদ সংক্রান্ত শুনানী হবে না এবং করোনাভাইরাসের দরুন এই গ্রীষ্মে কেউ তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হবেন না।
ক্যাম্পেইনারগণ এই বলে সতর্ক করেছেন যে, প্রাইভেট ও সোশ্যাল সেক্টরের লক্ষ লক্ষ ভাড়াটে গত মাসের শেষ থেকে আইনী পদক্ষেপের সম্মুখীন,কারণ করোনাভাইরাস মহামারির সময় কাজ হারানো বা কাজ বন্ধ হওয়ার পর তাদের ভাড়া বকেয়া অর্থাৎ অপরিশোধিত রয়ে গেছে। সরকারের মূল উচ্ছেদ সময়সীমা মার্চে ঘোষিত হয়, যা ২৫ জুন শেষ হওয়ার কথা। এ পর্যায়ে বাড়ির মালিকেরা ভাড়াটেদের উচ্ছেদে আইনী পদক্ষেপ নিতে বা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবেন।
সরকার বলেছে, তারা নতুন দিক নির্দেশনা তৈরীর জন্য বিচার বিভাগের সাথে কাজ করছে, যা এটা নিশ্চিত করবে যে, আদালতসমূহ করোনাভাইরাসের ফলে কর্মহীন হওয়া লোকজনসহ সুরক্ষা লাভের জন্য সকল পক্ষের প্রয়োজন মেটাতে ভালোভাবেই সক্ষম হবে।
মেয়াদ বৃদ্ধি, যা মোট ৫ মাস পর্যন্ত স্হায়ী হবে, তা ১ সেপ্টেম্বর আগে শুরু হতে পারবে না। সরকার আরো বলেছে, তারা চায় আদালত যেনো শেষ অবলম্বন হয়, তারা চায় বাড়ির মালিকদের ‘সম্ভব সকল পন্থা নিঃশ্বোষিত হোক’, যেমন- সম্ভাব্য উচ্ছেদের আইনী প্রক্রিয়া হ্রাসে ভাড়াটেদের সাথে নমনীয় ভাড়া পরিকল্পনায় সম্মত হোক।
‘হাউজিং চ্যারিটি শেল্টার’ বলেছে, মেয়াদ বৃ্দ্ধি শুধুই উচ্ছেদ সমস্যাকে আগষ্টের শেষ পর্যন্ত বিলম্বিত করবে এবং সরকারের উচিত, আগস্টের শেষে গৃহহীনদের জোয়ার প্রতিরোধে দ্রুত আইনের পরিবর্তনে কাজ করুক।
শেল্টার-এর প্রধান পলি নিয়েট বলেন, সরকার উচ্ছেদ নিষেধ সংক্রান্ত ঘড়ির কাঁটাকে পুনরায় সেট করেছে ঐসব পরিবারকে ক্রয় করে, যারা তাদের বাড়ি হারানো থেকে মাত্র সপ্তাহ কয়েক দূরে রয়েছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্হগিতকরণ।কিন্তু এটা কেবলমাত্র একটি বিরতি-শূণ্যতা।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শুধু লোকজনকেই বিরতি করেনি বরং যারা এই মহামারির সময় তাদের চাকুরী হারিয়েছেন বকেয়া ভাড়া আদায় করতে না পারার দরুন, তাদেরও এটা বিরত করবে। এমনকি যদি তাদের পুনঃপরিশোধের কোন পরিকল্পনা থাকে, এসব ঋণ হিমশিম খাওয়া ভাড়াটেদের নিষেধাজ্ঞা উঠার সাথে সাথে সরাসরি একটি স্বয়ংক্রিয় উচ্ছেদের ফায়ারিং লাইনে নিক্ষেপ করবে।
লন্ডন রেন্টার্স ইউনিয়ন-এর আমিন গিচিংগা বলেন, যদি ঋণ বাতিলে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয় তবে লাখো ভাড়াটে করোনা মহামারির দরুন এর ভেতরেই থেকে যাবে বর্তমান ঘোষণা শুধুই ব্যর্থতায় পর্যবাসিত হবে। আমরা এই গ্রীষ্মে একটি নৈরাজ্যকর ভাড়া ও উচ্ছেদ সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছি, যতক্ষণ না সরকার ভাড়ার ঋণ বাতিল করছে এবং উচ্ছেদ নিষেধাজ্ঞাকে স্হায়ী করছে।
ক্যাম্পেইন গ্রুপ ‘জেনারেশন রেন্ট’ বলেছে: সরকারকে অবশ্যই ভাড়া প্রতিকার ও অশোভন উচ্ছেদ চিরতরে বন্ধের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান আনয়নে সময় ব্যবহার করতে হবে। অনেক বাড়ির মালিক বকেয়ার ব্যাপারে ভাড়াটেদের সাথে আলোচনায় সম্মত হবেন কি-না, এ ব্যাপারে ক্যাম্পেইনাররা রীতিমত সন্দিহান। কিছু জরীপে দেখা গেছে, যে সব ভাড়াটে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলো ভাড়া মওকুফের জন্য তাদের বাড়ির মালিকদের বলেছিলেন, তারা এটা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৮০ লাখ ভাড়াটে রয়েছেন, যাদের ৪৫ লাখ বাড়ির মালিক প্রাইভেট। আর অবশিষ্ট সোশ্যাল ল্যান্ডলর্ড। যেমন কাউন্সিল ও হাউজিং এসোসিয়েশন থেকে বাড়ির মালিক।