শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা : সুন্দরী মেয়ে দেখলেই পুরুষের লালা ঝরে
লোকে বলে, সুন্দরী মেয়ে দেখলেই পুরুষের লালা ঝরে। এখন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এটা সত্যই। সম্প্রতি আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন, সুন্দরী আকর্ষণীয় মেয়েদের সঙ্গে কিছু সময় কথা বললেই পুরুষের লালায় নাটকীয় পরিবর্তন আসে।
যুক্তরাজ্যের বহুল প্রচারিত দৈনিক মেইলের “প্রেটি উইমেন মেইক এ ম্যান’স মাউথ ওয়াটার” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে গতকাল এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বিখ্যাত জার্নাল ‘ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউমেন বিহেভিয়র’-এর সর্বশেষ সংখ্যায় এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে আমেরিকান গবেষকদল এই ‘লালা ঝরা’ তত্ত্বকে ‘প্রেমপূর্ব প্রতিক্রিয়া’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে সংক্ষিপ্ত প্রেম অভিনয়েই পুরুষের লালা ঝরতে শুরু করে। নারী যত বেশি পুরুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে, পুরুষের লালা তত বেশি বেড়ে যায়।
শিকাগোর গবেষকরা পুরুষের হরমোন নিয়েও গবেষণা করেছেন। একদল যৌন-আবেদনময়ী কলেজ শিক্ষার্থীর ওপর গবেষণাটি চালান তারা। গবেষণায় তরুণ পুরুষ শিক্ষার্থীদের অন্য পুরুষ ও নারী সহপাঠীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
সহপাঠীদের সঙ্গে কথোপকথনের আগে ও পরে বিশ বছরের কাছাকাছি বয়সী এই শিক্ষার্থীদের লালার নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা।
লালা পরীক্ষা করে দেখা যায়, তরুণীদের সঙ্গে মাত্র পাঁচ মিনিটের আলাপেই পুরুষ শিক্ষার্থীদের লালায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে।
তবে যে পুরুষ শিক্ষার্থীরা তাদের পুরুষ সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলেছে, তাদের লালায় তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। সবচেয়ে নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে যে, পুরুষ তার নারী সহপাঠীকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছে তার লালায়। দেখা গেছে, তাদের লালায় যৌন হরমোন টেস্টোসটেরন উচ্চহারে বেড়ে গেছে।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মন ও জীববিজ্ঞান বিভাগের ড. জেমস রুনির নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
রুনি বলেন, ‘পুরুষরা লালা ফেলছিল, এ কথা আমি বলব না। তবে তাদের লালায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। নারী সহপাঠীদের সঙ্গে কথোপকথনের পরে তাদের লালায় অধিক মাত্রায় টেস্টোসটেরন পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘লালা পরিবর্তনের মাপ কম-বেশি হওয়ার ভিত্তি ছিল, পরস্পরের প্রতি প্রেমিক যুগলের মতো আকৃষ্ট হওয়া বা নিজেদের জাহির করার চেষ্টা করা।’
গবেষণায় অংশ নেয়া পুরুষদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, তারা নারী সহপাঠীদের শারীরিকভাবে কতটা আকর্ষণীয় দেখেছে? প্রশ্নটি করা হয়েছিল নারীদের ‘সেক্সি (যৌনাবেদনময়ী)’ ও ‘কিউট (সুন্দরী)’—এই দুই ভাগে বিভক্ত করে।
গবেষণার পাঁচ মিনিটের কথোপকথন বিষয়ে পুরুষদের আচরণ সম্পর্কে নারীদের বিস্তারিত প্রশ্ন করা হয়েছিল। যেমন পুরুষদের কতটা আকর্ষণীয় বা ব্যস্ত দেখাচ্ছিল, কিংবা তারা নারীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল কিনা।
গবেষণায় অংশ নেয়া নারীরা পেশাদার মডেল বা খুব সুন্দরী ছিল না। এটি প্রমাণ করে, যে কোনো নারীরই (সুন্দরী হোক বা না হোক) পুরুষের মুখে লালা ঝরানোর কারণ হওয়ার ক্ষমতা আছে।
পুরুষ যখন কোনো আকর্ষণীয় নারীকে দেখে, তখন পুরুষের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে বার্তা পাঠায়। আর তখনই পুরুষের যৌন-হরমোন টেস্টোসটেরন বের হতে থাকে এবং এটিই মুখের ভেতরে লালার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন হলো কিনা, তা লালা দিয়ে সহজেই পরীক্ষা করা যায়।