মে মাসে সরকারী ঋণের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ ৫৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড

যুক্তরাজ্যের বর্তমান ঋণ গোটা অর্থনীতির চেয়েও বৃহৎ

‘করোনা ভাইরাস আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে’

ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, বর্তমান পরিসংখ্যান এটা নিশ্চিত করেছে যে, করোনা ভাইরাস আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। মে মাসে সরকারী ঋণের পরিমাণ মাসিক রেকর্ড পরিমাণ ৫৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স (ওএনএস) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এর মানে হচ্ছে আজ অবধি চলতি অর্থ বছরে ঋণের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ ১০৩.৭ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌছেঁছে। এটা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৭ বিলিয়ন ডলার বেশী এবং ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া বর্তমান রেকর্ডসমূহ পর্যন্ত কোন বার্ষিক মেয়াদে সর্বোচ্চ।
অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক করোনা ভাইরাস লকডাউন থেকে দেশের অর্থনীতিকে নিরাপদে পুনরায় মুক্ত করার প্রচেষ্টা সমূহের প্রতি ইংগিত পূর্বক এই ভয়ানক পরিসংখ্যানের জবাব প্রদান করেন।

তিনি বলেন,  এটা আমাদের গণ অর্থনীতিকে একটি অধিকতর টেকসই ভিত্তিতে পুনরুদ্ধার করবে। ওএনএস আরো বলেছে, সর্বশেষ ঋণের পরিমাণ থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, ব্রিটিশ সরকারের ঋণ জিডিপি’র একটি পার্সেন্টেজ হিসেবে ১৯৬৩ সাল থেকে এই প্রথমবারের মতো ১০০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। মে মাসের শেষে ঋণের লেভেল ছিলো জিডিপি’র ১০০.৯ শতাংশ ,যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১.৯৫ ট্রিলিয়ন পাউন্ড। ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় এক পঞ্চমাংশ অর্থাৎ ১৭৩.২ বিলিয়ন পাউন্ড বেশী ।
সর্বশেষ ঋণের পরিমাণ মূলত: এপ্রিলের জন্য ঘোষিত ঋণের তুলনায় রেকর্ড ৬২.১ বিলিয়ন পাউন্ডের চেয়ে কিছুটা কম। কিন্তু ওএনএস গত শুক্রবার এপ্রিলের পরিসংখ্যান ১৩.৬ বিলিয়ন থেকে ৪৮.৫ বিলিয়ন পাউন্ড পরিমার্জন অর্থাৎ সংশোধন করে। অর্থমন্ত্রণালয় পূর্বের ধারণার চেয়ে কম কর ও জাতীয় বীমা থেকে অধিক অর্থ লাভ করেছে এবং করোনা ভাইরাস জব রিটেনশন স্কীমে কম ব্যয় করেছে ।
মিঃ সুনাক বলেন, আমাদের অর্থনীতি যাতে পুনরায় নিরাপদে খুলতে পারে এবং লোকজন কাজে ফিরতে পারে, সেজন্য আমরা আমাদের পরিকল্পনাকে একটি অব্যাহত ও নিরাপদ পদ্ধতীতে স্থাপন করেছি।এর অংশ হিসেবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চলতি সপ্তাহে দেশব্যাপী হাইস্ট্রিটস-কে খুলে দেয়া হয়েছে।
পিডব্লিউসি-এর সিনিয়র অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স টাকেট বলেন, দেশ খুলে দেয়ার ফলে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষণসমূহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং এটা কর গ্রহণকে বৃদ্ধি করবে। তিনি আরো বলেন, এসব পরিসংখ্যান আমাদেরকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক কোন গ্রীষ্মকালীন আর্থিক ঘটনায় একটি কঠিন পশ্চাদমুখিনতা মোকাবেলা করছেন, যাতে পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য পন্থাসমূহের অনুসন্ধানে তাকে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে দেখা যাচ্ছে।
ওএনএস অনুসারে, খুচরো খাতের জন্য সুখবর আছে। লকডাউনের সময় এপ্রিলের রেকর্ড সর্বনিম্ন বেচা-বিক্রির তুলনায় গত মাসে দোকানগুলোতে বিক্রি প্রত্যাশিত হারে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। অথচ এপ্রিলের লকডাউনকালে হাইস্ট্রিটস ভুতুড়ে নগরীগুলোতে পরিণত হয়।
মে মাসে খুচরো বিক্রির পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যদিও ফেব্রুয়ারীর তুলনায় তা এখনো ১৩.১ শতাংশ কম।ফেব্রুয়ারীতে মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব পুরোপুরি অনুভূত হয়নি।
কর্মকর্তারা বলেন, খাদ্য নয় এমন সামগ্রীর স্টোরসমূহে সবচেয়ে চাঙ্গাভাব দেখে গেছে। গৃহস্থালীর সামগ্রীর দোকানগুলোতে বিক্রি বেড়েছে ৪২ শতাংশ ।ইতোমধ্যে অধিক সংখ্যক ডিআইওয়াই ও হার্ডওয়্যার স্টোরগুলোও খুলে গেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button