বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের পতন
বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এখন মহাসংকটে। দেশটি সম্পূর্ণ অচেনা এক ভুবনে, প্রায় বন্ধুহীন অবস্থায় চরমভাবে ধুঁকছে কভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গেও। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানের ব্যাপক পতন ঘটেছে। ইউরোপ, এশিয়ায় বন্ধু হারানোর পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের সঙ্গে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পতনের মূলে রয়েছে নানা আন্তর্জাতিক ইস্যু—জলবায়ু পরিবর্তন, নভেল করোনাভাইরাস, হুমকি হয়ে আসা অর্থনৈতিক বিপর্যয় আর চীনের অবিশ্বাস্য উত্থান।
বিশ্ব অবাক তাকিয়ে দেখছে অনেক গরিব ও ছোট দেশও যেখানে করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ধুঁকছে। দেশটিতে ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে আর মারা গেছে ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের পতনের শেকড়টা প্রোথিত সাড়ে তিন বছর আগে! প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাড়ে তিন বছরের অধ্যায় আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সুনাম নষ্ট করার পাশাপাশি বিশ্বে ওয়াশিংটনের ভবিষ্যৎ ভূমিকাও অনিশ্চিত করে তুলেছে। অথচ ২০১৭ সালের ২০ জুন লিংকন মেমোরিয়ালে তিনি যখন শপথ নেন তখন এমন করুণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা কেউই কল্পনা করেনি হয়তো।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা-ফার্স্ট’ নীতি ক্ষুব্ধ করেছে সামরিক জোট ন্যাটোর অনেক দেশকে। ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হলে কেউ কেউ ন্যাটোর শেষও দেখতে পারছেন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রশ্নে ইউরোপ এখন চিরদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মতোই সমান গুরুত্ব দেয় চীনকে। সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া কিংবা ন্যাটো ইস্যুতে ট্রাম্পের অননুমেয় আচরণই এর পেছনের কারণ।
সুইডেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ড তো আমেরিকা-উত্তর বিশ্ব দেখতে পাচ্ছেন। তার টুইট, ‘আত্মবিশ্বাসী ও অবিচল চীনের রয়েছে পরিষ্কার স্ট্র্যাটেজিক পন্থা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চেষ্টা করছে বৈশ্বিক সহযোগিতা ধরে রাখতে। আর যুক্তরাষ্ট্র কভিড-১৯ মোকাবেলার চেয়ে বরং চীনের সঙ্গে লড়াই নিয়েই বেশি মনোযোগী।’