বাইরে সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ ব্রিটিশ বিজ্ঞান একাডেমির

মাস্ক ব্যবহারে অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্য

দীর্ঘ তিন মাস পর লকডাউন তুলে নিয়েছে ব্রিটেন। বিভিন্ন পাবে, পার্কে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে ঘরের বাইরে গেলেই মাস্ক কিংবা কোনো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির প্রধান প্রফেসর স্যার ভেঙ্কি রামাকৃষ্ণন।
যুক্তরাজ্য রয়্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট রামাকৃষ্ণন বলেছেন, জনাকীর্ণ কোনো জায়গায় গেলেই আপনার উচিত হবে মুখ ঢেকে রাখা। তিনি জানান, প্রমাণ রয়েছে যে, মুখ ঢেকে রাখা ব্যক্তি ও অন্যরা এতে সুরক্ষিত থাকে।

তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহারে অনেক দেশের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্য। এর সপক্ষে প্রমাণও আছে। গত এপ্রিলে যুক্তরাজ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরেছেন, যখন ইতালিতে ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ দশমিক ৮ শতাংশ ও স্পেনে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরেছেন।
মুখ ঢাকা নিয়ে যুক্তরাজ্যের একেক দেশে একেক নিয়ম। অতীতে ইংল্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগ জানিয়েছিল, ঘরের বাইরে তাদের মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
মুখ ঢেকে রাখা নিয়ে রয়্যাল সোসাইটি দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রফেসর রামাকৃষ্ণণ বলেন, বার্তাটি যথেষ্ট ‘পরিষ্কার’ ছিল না এবং নির্দেশনায় ‘অধারাবিহকতা’ থাকায় মুখ ঢাকার সুবিধা নিয়ে মানুষ সন্দিহান হয়ে পড়েন। তার কথায়, ‘আমরা চাইব এ বিষয়ক বার্তা দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা কঠোর আর সুস্পষ্ট হোক। আমরা সেখানেই মাস্ক পরব যেখানের পরিবেশ জনাকীর্ণ এবং এক ব্যক্তি আরেকজন থেকে দুই মিটার দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারে না। যদি আপনি জনাকীর্ণ জায়গা থাকেন তবে অবশ্যই মাস্ক পরবেন।’
সরকারের বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা দলের (এসএজিই) বিশেষজ্ঞদের মধ্যেই মাস্ক পরা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এশিয়ান দেশগুলোর দৃষ্টান্ত টেনে কেউ কেউ বলছেন, মুখ ঢেকে রাখলে ফ্লুর সংক্রমণ কমে না। কেউ কেউ বলছেন, এতে নিরাপত্তা নিয়ে একটা ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়।
তবে শেষ পর্যন্ত তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন-মাস্ক পরলে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কমে আসে।
সরকার বলছে, মাস্ক ঘরে কাপড় দিয়ে তৈরি করে নিলেই চলে, সবার হাসপাতালের মানের মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই।
মাস্ক পরা নিয়ে যুক্তরাজ্যের কোন জায়গায় কী নিয়ম
ইংল্যান্ড: বর্তমানে ইংল্যান্ডে পাবলিক পরিবহন, হাসপাতালের স্টাফ ও রোগী, দর্শনার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। যারা শপিং মল কিংবা দোকানে যাবেন তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়, তবে যদি সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে মাস্ক পরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স্কটল্যান্ড: স্কটল্যান্ডের পাবলিক পরিবহনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, ১০ জুলাই থেকে শপিংমলেও বাধ্যতামূলক হচ্ছে।
ওয়েলস: সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব নয়, এমন জায়গায় সাধারণ মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে ওয়েলসে। এ মধ্যে রয়েছে পাবলিক পরিবহন। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।
উত্তর আয়ারল্যান্ড: এ দেশটিতে পাবলিক পরিবহনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষা করা হচ্ছে। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button