হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করছে যুক্তরাজ্য
হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। অনতিবিলম্বে এই ঘোষণা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। সেইসঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই চুক্তি বাতিল করা হবে বলেও জানিয়েছে দেশটি। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ডোমিনিক রাব বলেন, হংকংয়ের ওপর নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপ করে চীন আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছে। তারপরও যুক্তরাজ্য বেইজিংয়ের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত কোনও ব্যক্তিকে হংকং অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে আসছিল। একইভাবে হংকংও ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে সন্দেহভাজন অপরাধীকে হস্তান্তর করে আসছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এই চুক্তি বহাল থাকলেও যুক্তরাজ্যের আশঙ্কা, নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দিতে পারে হংকং।
হংকংয়ের ওপর বেশি আধিপত্য বিস্তারে এ বছরের জুনের শেষদিকে বিতর্কিত নতুন নিরাপত্তা আইন পাস করে চীন। এ আইনের আওতায় হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো কার্যক্রম, কেন্দ্রীয় সরকারের অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে এ আইনকে হংকংয়ের মানুষের নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীরা।
চীনের ওই পদক্ষেপের পর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। নতুন আইন বেইজিং কিভাবে প্রয়োগ করছে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে ডোমিনিক রাব বলেন, ‘আমি কেবল বলতে চাই: যুক্তরাজ্য এবং সারা দুনিয়া পর্যবেক্ষণ করছে।’
এদিকে, হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টি। দলটির ছায়া পররাষ্ট্র মন্ত্রী লিসা ন্যান্দি বলেছেন, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। তিনি বলেন, ‘চীনের মানুষের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। তবে হংকংয়ের স্বাধীনতা বিলোপ, দক্ষিণ চীন সমুদ্রে চীন সরকারের পদক্ষেপ এবং উইঘুর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ভয়াবহ আচরণের কারণে আমাদের এখন ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।’