উইন্ডরাশ ক্ষতিপূরণের অস্বাভাবিক ধীরগতি: ভিকটিমরা তা পাবার আগেই মারা যাচ্ছেন
উইন্ডরাশ ক্ষতিপূরণ পরিশোধের বিষয়টি এতো ধীরগতি সম্পন্ন যে ভিকটিমরা ক্ষতিপূরণ পাবার আগেই মারা যাচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলেন, কম পক্ষে ৫টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ক্ষতিপূরণ পাবার আগেই, যেগুলোর দাবি দাখিল করা হয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, আমরা ঐসব পরিবার ও বৈধ প্রতিনিধিদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি প্রকৃত ব্যক্তিদের নির্ধারণে, যাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া যেতে পারে। তবে লেবার পার্টির ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, হোম অফিস সব সময়ই বেশ দুর্বল, কোভিড ও দুরবর্তী কাজে এটা এখন পক্ষাঘাত গ্রস্ত। এমনকি যখন জরুরী মানবিক উইন্ডরাশ কেসগুলো রয়েছে, তখন বিভিন্ন সময়ে এটা এই সবচেয়ে ট্র্যাজিক পরিস্হিতির সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।
লন্ডনস্ হর্নসে এন্ড উডগ্রীনের এমপি এখন একজন ভিকটিমের পক্ষে লড়াই করছেন, যে তার টিনেজে যুক্তরাজ্যে এসেছিলো, আর এখন তার বয়স প্রায় ৬৫। গত বছরের এপ্রিলে একটি দাবি দাখিল করা হয়েছিলো
কিন্তু ১৫ মাস পরেও এ ব্যাপারে সে কোন কিছু শুনতে পায়নি, যদিও হোম অফিস এটা নিশ্চিত করেছিলো যে, তার সকল প্রাসঙ্গিক প্রমাণাদি রয়েছে।
এ পর্যন্ত হোম অফিস ১২৭৫টি দাবি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে মাত্র ১১১টির ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছে, যার মোট পরিমাণ ৪৩০০০০ পাউন্ড। চূড়ান্ত বিল সম্ভবত: এর দশগুনেরও বেশী হবে। এখনো মিসেস প্যাটেল দাবি করছেন যে, যাদের জটিল কিংবা জীবন সংক্ষিপ্তকারী অসুস্হতা রয়েছে,এক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে।
উইন্ডরাশ ভিকটিমরা পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যুক্তরাজ্যে আগমন করে, যাদেরকে অন্যায়ভাবে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় অর্থাৎ তারা কাজ করতে পারবে না, কোন বাড়িঘর পাবে না কিংবা ভ্রমণ করতে পারবে না। তাদেরকে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করায় কমপক্ষে ১৩ জন মারা যান।
হাউস অব কমন্স-এর হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির সভাপতি ইয়েভেট কুপার বলেন, বিলম্বের অর্থ হচ্ছে, এদের অনেকেই ভয়ানক অন্যায়ের মুখোমুখি হবেন, উইন্ডরাশ ক্ষতিপূরণের কোন অর্থ পাবার আগেই মৃত্যুবরণ করবেন। হোম অফিসকে অবশ্যই জরুরীভাবে বিলম্ব পরিহার করতে হবে যাতে উইন্ডরাশ প্রজন্ম শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার লাভ করে।
উইন্ডরাশ প্রচারণাকারী ৫৭ বছর বয়সী সারাহ ও’ কন্নোর একটি দাবি করতে সক্ষম হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ৬ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে আসেন। কিন্তু একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় তিনি কোন চাকুরী বা কাজ পাননি কিংবা কোন বেনিফিট পেতে সক্ষম হননি এবং এতে তিনি দেউলিয়াত্বের সম্মুখীন হন।
৬২ বছর বয়সী হুবার্ট হাওয়ার্ড গত বছর নভেম্বরে মৃত্যুবরণ করেন তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব মন্ডুরের তিন সপ্তাহ পর। অবশ্য তার এই দুর্ভোগের জন্য হোম অফিস থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয় । তিনি ১৯৬০ সালে ব্রিটেন আসেন।কিন্তু তিনি জ্যামাইকায় ফিরে যেতে পারেননি।এমনকি তার অসুস্থ মাকে দেখতেও সেখানে যেতে পারেননি। কারণ তিনি কোন পাসপোর্ট পাননি।
গত মাসে, যশুয়া মোজেস নামক জনৈক রেগগি সংগীত শিল্পী মারা যান।ষাটের দশকে ১২ বছর বয়সে তিনি ব্রিটেন আসেন। কিন্তু ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের কিছুকাল পরেই তিনি মারা যান। জ্যামাইকায় ফিরে যাবার জন্য তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই চির বিদায় নেন এই পৃথিবী থেকে।
সেন্ট আইভসের টেসকো ফিশমংগার এডডি লিন্ডসের কর্ণওয়াল চাকুরীচ্যুত হন, কারণ তিনি তার স্ট্যাটাস প্রমাণ করতে পারেননি। তিনিও কোন ক্ষতিপূরন পাননি মৃত্যুর আগে।