‘ঘটনাবহুল এক বছর’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিসের

নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়, ব্রেক্সিটে সফল, বৈশ্বিক করোনা তাণ্ডব-যাতে তিনিও মারা যেতে পারতেন, ডিভোর্স, পুনরায় বাগদান এবং সন্তানের জন্ম-এভাবে ঘটনাবহুল ছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ক্ষমতার প্রথম ১২ মাস। শুক্রবার ক্ষমতার এক বছর পূর্ণ হয়েছে ৫৬ বছর বয়সী বরিসের।
ব্রিটিশ এক আইনপ্রণেতা দ্য গার্ডিয়ানে একে ‘নরকের এক বছর’ আখ্যা দিয়েছেন। যদিও বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইউগভের জরিপ বলছে, নাগরিকরা কনজারভেটিভ পার্টির প্রতি আস্থা রেখেছেন। ৮৯ শতাংশ নাগরিক চান-বরিসই দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকুক।

এএফপি বলছে, করোনাভাইরাস বরিসকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রায় তিন মাসের লকডাউনে ব্রিটিশ অর্থনীতির চরম ক্ষতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা হবে এর চেয়েও ভয়াবহ।
এছাড়া ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য কেমন হবে সে বিষয়ে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি বরিস। এ বিষয়ে বিরোধী দল লেবার পার্টির বিরোধিতার মুখে পড়ছেন তিনি। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্কটিশ জাতীয়তাবাদী ও তারই দলের কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী সদস্য। এ নিয়ে অনড় বরিস।
প্রধানমন্ত্রীত্বের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বরিস বলেন, ‘আমরা ব্রেক্সিট সম্পন্ন করেছি এবং আমাদের অগ্রাধিকারের দিকে অগ্রসর হয়েছি। এরই মধ্যে ভয়াবহভাবে দেশে আঘাত হানে করোনাভাইরাস। আজ আমি প্রতিজ্ঞা করতে চাই যে, এ ভাইরাসের কারণে আমি দেশকে পেছনে হঠতে দেব না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র ব্রেক্সিট বিলের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস। ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদ বিল পাস করতে না পারায় পার্লামেন্টের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হন তেরেসা। এরপর খুব সহজেই কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্ব পান বরিস। নতুনভাবে শুরু করেন বিচ্ছেদ পরিকল্পনা।
৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে নিজের বিচ্ছেদ চুক্তি পাস করাতে পার্লামেন্ট স্থগিত করায় সমালোচনার মুখে পড়েন বরিস। অবশেষে চার বছরের এ রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসানে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ডাক দেন তিনি।
১৯৮০ সালে মার্গারেট থ্যাচারের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পার্লামেন্টে আসে বরিসের দল। তার নেতৃত্বে বিচ্ছেদের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয় ৩১ জানুয়ারি।
ইইউ’র সঙ্গে প্রায় ৫০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে ‘নব সূচনা’র প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। মাস না গড়াতেই তাণ্ডব শুরু করে করোনাভাইরাস। ইউরোপের যে কোনো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৫ হাজার ৫৫৪ জন মানুষ মারা গেছে ব্রিটেনে। করোনায় অর্থনৈতিকভাবেও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দেশটি।
মার্চের শেষ দিকে বরিসও করোনায় আক্রান্ত হন। অন্যদের মতো এ ভাইরাসে তিনিও মারা যেতে পারতেন। ক্ষমতার বছরেই বরিসের দ্বিতীয় স্ত্রী ম্যারিনা হুইলারের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে। এ দম্পতির চার সন্তান। এরপর পুরনো বান্ধবী ক্যারি সাইমন্ডসের সঙ্গে বাগদান করেন। ইতোমধ্যে সাইমন্ডস একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এটি তার ষষ্ঠ সন্তান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button