ঋষি সুনাক কি ব্রিটেনের উত্তরণ ঘটাতে যাচ্ছেন?
যখন করোনাভাইরাস জনিত স্বাস্থ্য সংকট ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে, তখন অর্থনৈতিক বাস্তবতা প্রকাশ পাচ্ছে। চাকুরী হারানোর বিষয়টি চরমে পৌঁছতে শুরু করেছে- এমনকি ফারলো কর্মসূচীটি অসম্পন্ন থাকার আগেই। জিডিপি’র পরিসংখ্যান ভয়াবহ, ঋণের বোঝা বেড়েই চলছে এবং ভি-আকৃতির পুনরুদ্ধারের আশা শূন্যে মিলিয়ে গেছে। এখন আলোচনার বিষয়টি একটাই, যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তার কুৎসিত মাথা উঁচু করে তুলেছে।
সরকার দেশে চূড়ান্ত অবলম্বন হিসেবে ব্রিটিশ কোম্পানী সমূহে সরাসরি ইকুইটি স্টেইক গ্রহন করছে। এ অবস্থায় ভোটারদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, চ্যান্সেলর ঋষি সুনাকের প্রকৃত অর্থনৈতিক বিশ্বাসগুলো কী। যুক্তরাজ্য ১৯৮০ সাল থেকে, তার অধিক ধনবান মার্কিন ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলা যায়, মুক্ত বাজার পুঁজিবাদকে সমর্থন করেছে- যেনো তারা ফিরে আসছে এমন ভাবে কোম্পানীসমূহকে সুযোগ দিয়েছে অঙ্গনে পা রাখতে। শুধুমাত্র বছর দশেক আগের আর্থিক সংকটকালে দেশটি এই মন্ত্রে ফিরে গিয়েছিলো, যখন বহু বছরের খারাপভাবে অংককৃত ঝুঁকির পর ব্যাংক সমূহ উত্তরণের পথে গিয়েছিলো।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি অর্থনীতি ডোবার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে কী তাকে রক্ষা করবে এবং কী বিষয় বাদ দেয়া হবে। সুনাকের সিবিআইএলএস ঋন এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এর সিসিসিএফ স্কীম রক্ত সঞ্চালন করছে। অবশ্য ঋণ যদি রাজস্বসমূহে সেবাদান করতে না পারে তবে তা কোম্পানীসমূহের খুব সামান্য কাজেই আসবে। প্রতিটি খাতই উত্তরনের বিষয়। বিমান চলাচল, প্রতিরক্ষা ও তেল শিল্পসমূহ বিলের শীর্ষে থাকবে। তারা বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ, দক্ষতা নিয়োগ করছে যেনো হারানোটি কখনো ফিরেই আসবে না। মজুরীর প্রবৃদ্ধি উচ্চ, উৎপাদনশীলতার অবস্থাও তাই। যা-ই হোক, অনেকে যুক্ত দেখাচ্ছেন যেনো এসব ইন্ডাস্ট্রি ফিরে পেতে পারে।
গত এক দশক যাবৎ গাড়ির বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে, যখন সাধারন মানুষ ক্ষদ্রাকৃতির ও অধিক জ্বালানী সাশ্রয়ী গাড়ি খুঁজছে, বিনিয়োগকারীরা অধিক পরিচ্ছন্ন জ্বালানী চাইছে বলে তেল শিল্পকে লড়াই করতে হচ্ছে। বর্ণিত খুচরো বিক্রেতা ও রেস্তোরাঁর বিপরীত মেরু নিম্নভাবে পৌঁছেছে, এসব শিল্পকারখানার লাখ লাখ লোক নিয়োগ সত্বেও। ইতোমধ্যে এক গুচ্ছ গৃহস্থালীর নাম মুছে গেছে এবং শপিং সেন্টারের ল্যান্ডলর্ড ‘ইনটু’ যথেষ্ট প্রতিবাদ ছাড়াই তিরোহিত হয়ে গেছে। সামান্য আশা থাকলেও এসব ইন্ডাষ্ট্রির প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। তর্কিতভাবে পাবলিক মার্কেটগুলো কখনোই এসব কোম্পানীর একটি স্বাভাবিক আবাসস্থল ছিলো না এবং একটা জিনিসই নিশ্চিত যে, ‘সিড’ একটি মিলিয়নেয়ার নয়। তা সত্বেও উত্তরণসমূহ যখন আসবে, ব্রিটিশ জনগনের কাছে তা গ্রহনযোগ্য করা সুনাকের জন্য একটি কঠিন কাজ হবে।
ইউরোপ বেইল আউটসমূহ অর্থাৎ উত্তরনগুলো একটি বিস্তৃত ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ও অর্থনৈতিক কৌশল হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় বেচা বিক্রি হয়। তারা প্রতিশ্রুতি দেয় যে, কোম্পানী সমূহ, যেগুলোর পুনরুদ্ধার হবে, হবে অধিকতর সবুজ এবং অধিকতার উন্নত, একবার সরকার এসব সম্পন্ন করলে। হয়তো এটা ঋষির জন্য একটি ব্যাপকভিত্তিক শিল্পসংক্রান্ত কৌশল অনুমোদনের উপযুক্ত সময় এবং ব্রিটেনের অর্থনীতিকে আরো বেশ কিছু ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপীয় হওয়ার সুযোগ।