লকডাউনের প্রভাব: লন্ডনের বাসিন্দাদের নগরী ত্যাগ শতকরা ১৫০ ভাগ বেড়েছে
প্রোপার্টি পোর্টাল ‘রাইটমুভ’-এর সমীক্ষা অনুসারে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে বর্তমানে বসবাসরত সম্ভাব্য ঘরবাড়ির ক্রেতাদের অনেকে নগরী ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে বসবাসের কথা ভাবছেন। এদের সংখ্যা গত বছরের জুন-জুলাই মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে শতকরা ১৪৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সেটেলাইট টাউনগুলোতে বাড়ি অনুসন্ধানের সংখ্যা ৭৯ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাজ্যের সকল বড়ো নগরীসমূহে এমনটি লক্ষণীয়।
নগরী ত্যাগের আরেকটি কারণ হতে পারে লন্ডনের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘরবাড়ির মূল্যের স্বল্পতা। রাইটমুভ-এর প্রোপার্টি এক্সপার্ট মাইলস শীপসাইড মনে করেন যে, জীবনযাত্রার মান হচ্ছে মূল বিষয়। তিনি বলেন, একটি নতুন জীবন পদ্ধতি, অধিকতর শান্ত পরিবেশ, গ্রামাঞ্চলের সৌন্দর্যের প্রাচূর্য এবং অধিকতর প্রশস্ত বহিরাঙ্গন লোকজনকে আকৃষ্ট করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে। তিনি আরো বলেন, আমরা গত এপ্রিল থেকেই অধিক সংখ্যক নগরীর বাসিন্দাদের নগরীর বাইরে গিয়ে বসবাসের প্রবণতা লক্ষ্য করছি এবং এখনো তা অব্যাহত।
লন্ডন থেকে উল্লেখযোগ্য দূরে অবস্থিত সবচেয়ে জনপ্রিয় গ্রাম হচ্ছে ‘আইভার’। বাকিংহ্যামশায়ারে এর অবস্থান। গ্রামটিতে রয়েছে অনেক মাল্টিমিলিয়ন পাউন্ডের ম্যানশন অর্থাৎ আলীশান বাড়ি। কিন্তু একটি ৩ থেকে ৪ বেডরুমের ফ্যামিলি হোমের মূল্য ৬ থেকে ৭লাখ পাউন্ড। যদিও আইভার নিজে খুব বেশী সুপরিচিত নয়- তবুও এর বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি পঞ্চাশ দশকের কিংবা এর পরবর্তী সময়ে নির্মিত। এখানে রয়েছে একটি কার্যকর হাইস্ট্রিট এবং ভালো ভালো স্কুল। এটা সৌন্দর্যমন্ডিত কৌন উপত্যকায় অবস্থিত। লন্ডন থেকে মাত্র আধ ঘন্টার রাস্তা। যখন এক পর্যায়ে ক্রসরেল স্থাপিত হবে, তখন সেন্ট্রাল লন্ডন এবং সিটি এন্ড ক্যানারি হোয়ার্ফ-এর সাথে এর একটি নতুন সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। আইভার থেকে ৪ মাইল দূরের আরেকটি গ্রামের নাম ডেনহ্যাম।
হাউস বিল্ডার ওয়েস্টন হোমস্ বলেন, তারা গত জুলাই থেকে লন্ডন ত্যাগে ইচ্ছুক বাসিন্দাদের কাছে ডেনহ্যাম ফিল্ম স্টুডিওজ-এ রূপান্তরিত বাড়ি বিক্রি করছেন। তারা স্টাম্প ডিউটি এড়াতে চাইছেন। এসময়ে মোট বিক্রির পরিমাণ ২০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী। রূপান্তরের আগে মূল স্টুডিওটিতে ‘দ্য গ্রেট এসকেপ’ সহ বহু বিখ্যাত চলচ্চিত্র তৈরী হয়।
চ্যান্ডলার্স ইনডিপেন্ডেন্ট প্রোপার্টি বিশেষজ্ঞ বেন সাউথ বলেন, শহর বা নগরীর অভ্যন্তর ভাগ থেকে নিকটস্থ গ্রামে কিংবা শহরের সবুজ শ্যামল এলাকাসমূহে স্থানান্তরের ঘটনা অনেক। যেহেতু লোকজনের প্রতিদিন ভ্রমনের প্রয়োজন নেই এবং তারা বাড়িতে বসেই কাজ করতে পারছেন এবং সম্ভাব্য ক্রেতারা স্টুডিও, বাগান এবং অধিকতর শ্যামল ও কম শহুরে পরিবেশে কাজ করার এবং থাকার সুযোগ পাচ্ছেন, তাই এসব প্রত্যন্ত এলাকা জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে নগরবাসীদের কাছে।