প্রত্যেক নাগরিকের টিকার ডোজ নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সরকার

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলা করতে টিকার অপেক্ষায় মুখিয়ে রয়েছে পুরো বিশ্ব। ইতিমধ্যে নানা দেশের সরকার সেসব সম্ভাব্য টিকার ডোজ আগেভাগে পেতে প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে করছে হাজার হাজার কোটি ডলারের চুক্তি। সে ধারায়, যুক্তরাজ্য সম্প্রতি নতুন দু’টি পরীক্ষামূলক টিকার ৯ কোটি ডোজ পাওয়ার চুক্তি করেছে। টিকা দু’টি তৈরি করছে বেলজিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জানসেন ও মার্কিন বায়োটেক কোম্পানি নোভাভ্যাক্স। টিকাগুলো পেতে যুক্তরাজ্যকে কত অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে তা জানা যায়নি। এ নিয়ে মোট ছয়টি পরীক্ষামূলক টিকা পাওয়ার চুক্তি করেছে দেশটি। সবমিলিয়ে যুক্তরাজ্য ৩৪ কোটি টিকা পাওয়ার চুক্তি করেছে এখন পর্যন্ত। এই হিসাবে, প্রত্যেক বৃটিশ নাগরিকের জন্য ৫ ডোজ টিকা নিশ্চিত করেছে সরকার। এর মধ্যে কিছু টিকা মাত্র দুই ডোজই যথেষ্ট।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের হিসাব বৃটেনের জনসংখ্যা ৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার। সে হিসেবে প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষামূলক টিকার ডোজ নিশ্চিত করেছে বৃটিশ সরকার। কিন্তু বেশিরভাগ পরীক্ষামূলক টিকাই ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে আশঙ্কা থেকে, কোনো কার্যকরী টিকা অনুমোদন পেলে তাৎক্ষণিকভাবে সে টিকার সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে চাইছে যুক্তরাজ্য। এজন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাপূর্ণ টিকাগুলোয় বিনিয়োগ করে চলেছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার।
যুক্তরাজ্য সরকার ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের প্রধান ক্যাট বিংহাম বলেন, আমরা জানি না, চুক্তি করা কোনো টিকা আদতে কার্যকরী হবে কিনা। এগুলোর মধ্যে মানুষের উপর ব্যবহারের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত করোনার কোনো টিকা নেই। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাজ্যের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় টিকা নিশ্চিত করায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে রাশিয়া একটি টিকার অনুমোদন দিলেও, এখন অবধি কোনো কার্যকরী টিকার অনুমোদন দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অর্থাৎ, এখনো বিশ্বের কোথাও সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি টিকা ও ওষুধ। এর মধ্যে কয়েকটি টিকা প্রাথমিক পরীক্ষায় বেশ সফলতা দেখিয়েছে।
যুক্তরাজ্য এখন অবধি যেসব চুক্তি করেছে সেগুলো হলো: এস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে মিলে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের তৈরি করা টিকার ১০ কোটি ডোজ; জানসেনের টিকার ৩ কোটি ডোজ; বায়নটেক ও পিফাইজারের টিকার ৩ কোটি ডোজ; ভালনেয়ার টিকার ৬ কোটি ডোজ; জিএসকে ও সানোফির টিকার ৬ কোটি ডোজ এবং নোভাভ্যাক্সের টিকার ৬ কোটি ডোজ। সবমিলিয়ে পরীক্ষামূলক টিকার ৩৪ কোটি ডোজ আগ থেকে নিশ্চিত করে রেখেছে যুক্তরাজ্য। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকার আগাম ভাণ্ডারগুলোর একটি তৈরি করে রেখেছে তারা। এর মধ্যে অক্সফোর্ড, বায়নটেক ও পিফাইজারের টিকাগুলো ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার শেষ ধাপে রয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button