লন্ডনের আগামী পাবলিক ট্রান্সপোর্ট হবে বিদ্যুৎ চালিত

যখন কেউ ভবিষ্যত পরিবহনের কথা ভাববে, তখন সহজেই যে চিত্রটি তার মানসচক্ষে ভেসে ওঠবে তা হচ্ছে, উড়ন্ত ট্রেন,চালকবিহীন বাস ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে ২০৩০ সালে আমাদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা হবে সম্ভবত এসব থেকে কিছুটা ভিন্ন। তেমন কোন বড়ো পরিবর্তন আমরা দেখতে পাবো না।

শুরুতে বলা যায়, আমরা সম্ভবত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা সরকারী পরিবহন অনেক কমই ব্যবহার করবো। লাফবারা ইউনিভার্সিটির ট্রান্সপোর্ট স্ট্র্যাটেজির অধ্যাপক মারকাস ইনোক বলেন, প্রচলিত নিয়মে এই প্রত্যাশা করা যায় যে, চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, তাই ধারণক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা থাকে সব সময়ই। কিন্তু বাড়ির দাম বৃদ্ধির ফলে তরুণরা বাধ্য হচ্ছে লন্ডন ছাড়তে, বাইরের এলাকাগুলোতে চাকুরী বাড়ছে এবং দূরবর্তী কাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে -এর মানে হচ্ছে সেন্ট্রাল লন্ডনের প্রচলিত পরিবহন ভবিষ্যতে অনেকটাই বদলে যাবে।
কোভিড মহামারি সম্ভবত:  এটাই ত্বরান্বিত করছে যে, চারপাশের হোম ওয়ার্কিং বদলাচ্ছে, খুব কম সংখ্যক লোক প্রতিদিন কেন্দ্রীয় অফিসে কাজ যাচ্ছে, ঘরে বসে দূরবর্তী কাজ করছে। এটা ব্যবসায় ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা ও কল্যাণ বয়ে আনছে কর্মচারীদের জন্য।
ইনোক বলেন, পিক আওয়ারে লোকজন কম ভ্রমণ করতে পারে, কারণ তারা ঘরে বসে কাজ করতে পারে। হতে পারে আমরা অধিকতর স্মার্টভাবে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেবো। আমাদের ক্ষমতাকে আমরা গ্রহণ করবো এবং এটাকে অধিকতর ভালোভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করবো।
গত বছর ডিসেম্বরে ট্রান্সপোর্ট অব লন্ডন একটি পাঁচ বছর মেয়াদী ব্যবসা পরিকল্পনা গ্রহণ করে যাতে আল্ট্রা ‘ল’ এমিশন জোন সম্প্রসারণ, নির্দিষ্ট আন্ডারগ্রাউন্ডে সোলার প্যানেল স্থাপন, ডিএলআর ও ট্রেন ডিপো এবং ২ হাজারেরও বেশী জিরো-এমিশন অর্থাৎ শূণ্য কার্বন নিঃসরণকারী বাস অন্তর্ভুক্ত। ২০১৮ সালে ১২টি স্বল্প কার্বন নিঃসরণকারী বাস জোন ইতোমধ্যে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ গড়ে ৯০ শতাংশ হ্রাস করেছে। ২০০৫ সাল থেকে রোমে ব্যাটারী চালিত ট্রলিবাস ব্যবহৃত হচ্ছে, যেগুলো চলার সময় মাথার উপরিস্থিত তার থেকে চার্জ গ্রহণ করে। এটাও লন্ডনের জন্য সমাধানের আরেকটি পন্থা হতে পারে।
ইলেক্ট্রিক ট্রেন হতে পারে অধিক কৌশলপূর্ণ। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ঠিক ৪২ শতাংশ রেল নেটওয়ার্ক ইলেক্ট্রিক অর্থাৎ বিদ্যুৎচালিত। যুক্তরাজ্যের পরিবহন থেকে কার্বন নিঃসরণের শতকরা মাত্র এক শতাংশ হয় রেল থেকে। ইলেক্ট্রিক ট্রেনে জ্বালানী ব্যয়ও স্বল্প, দ্রুততরও বটে। ভবিষ্যতের স্মার্ট সিটি হিসেবে লন্ডনের পরিবহন নিয়ে ভাবতে হলে বিদ্যুৎচালিত এসব যানবাহন যে অগ্রাধিকার পাবে—এতে কোন সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button