আদালতের হস্তক্ষেপ
হোম অফিসকে বাতিল করতে হলো বহিষ্কৃত অভিবাসীদের একটি ফ্লাইট
হোম অফিসকে শেষ পর্যন্ত অভিবাসী বহিষ্কৃতদের নিয়ে একটি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। ফ্লাইটটি অবৈধ বলে মনে হওয়ায় আদালত এই ফ্লাইট বাতিলের আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিলো। ক্যাম্পেইনাররা বলেন, এ ধরনের ফ্লাইটগুলো ‘ভয়ংকর ও তড়িঘড়ি করে নেয়া ব্যবস্থা’ ছাড়া আর কিছুই নয়। অপরদিকে হোম অফিসের দাবি, আইনী চ্যালেঞ্জ ভিত্তিহীন এবং এর মোটেই কোন সারবত্তা নেই। ‘জয়েন্ট কাউন্সিল ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব ইমিগ্রান্টস’-এর লিগ্যাল পলিসি ডিরেক্টর চাই প্যাটেল বলেন, যুক্তরাজ্যে অভিবাসন বন্দীদের প্রতি আচরণ একটি জাতীয় লজ্জার বিষয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা একটি বৈশ্বিক মহামারি মোকাবেলা করছি এবং হোম অফিস ভয়ংকর ও তড়িঘড়ি বহিষ্কারের ফ্লাইটসমূহ পরিচালনায় মনোযোগ নিবদ্ধকরণের বিষয়টি বেছে নিয়েছে। তারা অরক্ষিত শরণার্থীদের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।
ফ্লাইটটি বাতিলের একদিন আগে অর্থাৎ গত বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের ডিপার্টমেন্ট কুয়েত, ইরান, সিরিয়া, ইরাক, সুদান ও ইয়েমেন থেকে আসা ১২ ব্যক্তিকে বহিষ্কার করে। তাদেরকে ফ্রান্স ও জার্মানীতে পাঠানো হয়। গত ১৪ আগষ্ট ডিঙি নৌকায় ডোভার সমুদ্রসৈকত আগমনকারী জনৈক ইরানী নাগরিককে নেদারল্যান্ডে ফেরত পাঠায়।
দাতব্য সংস্থাসমূহ জানিয়েছে যে, ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে অভিবাসী ও শরণার্থীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার গ্যাটউইকের ব্রুকহাউস ডিটেনশন সেন্টারে বন্দীদের ৮টি আত্মহত্যা প্রচেষ্টার কারণ। এদের ৩জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। আত্মহত্যা প্রচেষ্টা ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে হোম অফিস এসব অস্বীকার করে বলে, এসব লোকের যুক্তরাজ্যে থাকার কোন অধিকার নেই।
হোম অফিসের জনৈক মুখপাত্র দাবি করেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বন্দীদের কল্যানের বিষয়টি দেখে থাকি।
চলতি সপ্তাহে সিভিল সার্ভেন্টরা অভিবাসী ও শরণার্থীদের পক্ষের আইনজীবীদের ‘অ্যাক্টিভিস্ট ল’ইয়ার’ অর্থাৎ ‘কর্মী আইনজীবী’ আখ্যায়িত করলে শেষ পর্যন্ত হোম অফিসকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।
হোম অফিসের মুখপাত্র তাদের বহিষ্কারকরনের উদ্যোগের পক্ষে এই বলে যুক্তি দেখান যে, যারা অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে তাদের সম্পূর্ণ বৈধ ও আইনানুগভাবে ফেরতপ্রদানের বিষয়টি সম্পাদনে সরকারের প্রচেষ্টা শেষ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জে প্রায়ই বিপর্যস্ত হতে দেখা যায়। একটি ফ্লাইটের র্নিধারিত সময়ের এক ঘন্টা আগে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ দাখিল করা হয়।
তিনি বলেন, এসব দাবি প্রায়ই ভিত্তিহীন ও সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন। তবে এটা সঠিক যে যারা একটি নিরাপদ দেশ হয়ে ভ্রমণ করেছে আমরা তাদের বহিষ্কার করতে চাই এবং তাদের যুক্তরাজ্যে থাকার কোন অধিকার নেই। তাদের বহিষ্কারের ক্ষেত্রে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী নই।
হোম অফিসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মহামারীর সময় হোম অফিস ২৮৫ ব্যক্তিকে বহিষ্কার বা নির্বাসনে ১মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে।