কঠিন থেকে কঠিনতর চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি

ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। গোটা বিশ্ব এখন করনোরা করাল গ্রাসে। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শুধু তাই নয়, করোনার প্রভাবে কার্যত ধ্বসে গিয়েছে বিশ্বের অর্থনীতি। ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড আগেই এটিকে মানবজাতির অন্ধকারতম সময় বলে উল্লেখ করেছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসের কথায়, ‘করোনা মানবজাতির স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামোকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির হার এবার সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছতে পারে’। এযাবত্কালে বিশ্ব এমন আর্থিক মন্দার মুখোমুখি হয়নি।
আইএমএফ-এর ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা। তাদের আশঙ্কা, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটেও ছাপিয়ে যাবে এবারের মন্দা। আইএমএফ- এর দাবি, ‘আমরা এক বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকলাম, যেখানে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে ‘। কারণ প্রতিটা দেশের আভ্যন্তরীন সম্পদ যথেষ্ট নয়৷ এই দেশগুলোর আবার অনেকেই ঋণের ভারে জর্জরিত ৷ ৮০ টি দেশ যাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের ৷ করোনা ভাইরাস অতিমারি সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে ৷ চলতি বছরে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার জেরে কয়েক লক্ষ কোটি ডলার ক্ষতি হতে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতির, জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট। COVID-19 সংকটের শিকার হতে চলেছে বিশেষ করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো। এই পরিস্থিতিতে আগামী দুই বছর বিনিয়োগে মন্দা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সংকট থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বাঁচাতে ২৫,০০০ কোটি ডলার উদ্ধারকারী অনুদানের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার দুই মাসের মধ্যে তা বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়াতে থাকে, যার শিকার হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো। সংক্রমণের জেরে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই দেশগুলোর বিনিয়োগ নীতি ও সরকারি বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা। দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি এবং মার খাচ্ছে রপ্তানিসূত্রে আয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পণ্যের মূল্যহ্রাস এবং পর্যটনক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য লোকসানের হার।
United Nations Conference on Trade and Development-এর ‘The COVID-19 Shock to Developing Countries: Towards a ‘whatever it takes’ শীর্ষক বিশ্লেষণী রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা পিছিয়ে পড়তে চলছে। পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা দেশগুলোর আগামী ২ বছরে বিনিয়োগ পড়তে পারে ২ ট্রিলিয়ন থেকে ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার ধাক্কা আছড়ে পড়ার সম্ভাবনায় অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকরা যেমন কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন, সেরকমই সংগঠিত ক্ষেত্র, বহুজাতিক সংস্থার কর্মচারিরাও চাকরি হারানো , বেতন সংকোচনের আশঙ্কায় ভুগছেন৷ সমস্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আগে পৃথিবীর সব বড় দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button