কাতারে জমি কিনলেই স্থায়ী নাগরিকত্বের সুযোগ
কাতারের কিছু নির্ধারিত এলাকায় জমি কিনলে কাতারি নাগরিকের স্পন্সর ছাড়াই সপরিবারে কাতার থাকার সুযোগ পাবেন বিদেশিরা। দেশটির রিয়েল এস্টেট খাতকে লাভজনক ও অভিবাসীদের ব্যবসা বাণিজ্য সহজ করার সুবিধার্থে অভিবাসীদের কাছে জমি বিক্রির নতুন এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কাতার প্রশাসন।
২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে কাতার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা খাতে হাজার হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করলেও নিজেদের দেশে কোন বিদেশি নাগরিকদের বিনিয়োগের সুযোগ দেয়নি এতো দিন। তবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন আরব দেশের প্রথা ভেঙে বিদেশিদের কাতারে সম্পত্তি কিনলে স্থায়ী ও অস্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি জায়গা কিনে এখানে বাড়ি করা যায়, তাহলে যারা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আছে তারা সুযোগ পাবে। আমি আশা করি, আমাদের বাংলাদেশ কমিউনিটির ভেতরে এমন অনেক লোক আছে যারা এই অভিবাসন প্রক্রিয়া গ্রহণ করবে।’ শুধু বিনিয়োগ নয়, কাতারের রিয়েল এস্টেট খাতকে লাভজনক করতে অভিবাসীদের কাছে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দূতাবাস।
কাতার বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান ও কাউন্সিলর মো. মাহবুব রহমান বলেন, ‘বেশ কিছু এলাকায় বিদেশী নাগরিক যেন রিয়েল এস্টেট করতে পারে সেই সুযোগ পাওয়া গিয়েছে। সর্বোপরি পুরো বিষয়টা বাংলাদেশ এবং কাতারের বাণিজ্যিক এবং বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদার করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।’
৭ লাখ ৩০ রিয়ালের সম্পত্তি কিনলে কাতারি নাগরিকের স্পন্সর ছাড়া সপরিবারে থাকার সুযোগসহ ও ৩৫ লাখ ৫০ রিয়ালের সম্পত্তি কিনলে স্থায়ীভাবে সপরিবারে থাকার সুযোগ পাবেন অভিবাসীরা। সেইসাথে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষাসহ অন্যান্য বিনিয়োগের অধিকারও থাকবে অভিবাসীদের।
কাতারের ১৬ এলাকায় ৯৯ বছরের মেয়াদে সম্পত্তি কিনতে পারবেন বিদেশিরা, এইসব এলাকার মধ্যে রয়েছে সারে মুশায়রিব, ফিরিজ আব্দুল আজিজ, দোহা জাদিদ, গানেম আতিক, আররিফা, আলহিতমি আতিক, সালাতা, বিন মাহমুদ ২২ ও ২৩, রাওদাতুল খায়ল, আল মানছুরা, ফিরিজ বিন দিরহাম, নাজমা, মুগলিনা, খুলাইফাত, আলসাদ, মিরকাব জাদিদ, আলনাছের, মাতার এলাকা। তবে কাতারের সব এলাকায় স্থায়ীভাবে সম্পত্তি কেনার সুযোগ পাবেন না বিদেশিরা। আরো কিছু এলাকায় এই সুযোগ বরাদ্দ থাকবে এগুলো হলো লাকতাইফিয়া, দ্য পার্ল, আলখোর, দাফনা (৬০ ও ৬১), উনাইজা, লুসাইল, খারায়েজ, জাবাল ছুআইলাব।
সম্পত্তি কেনার পাশাপাশি কাতারে যে কোনো শপিং মলে নিজের নামে দোকান ও অফিস কেনা, যে কোনো এলাকায় ফ্ল্যাট কেনারও সুযোগ পাবেন বিদেশিরা। কাতারের মন্ত্রিপরিষদ এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিস্তারিত নীতিমালা প্রকাশ করেছে। কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কাতারের আইন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে।