যুক্তরাজ্যে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হচ্ছে
ব্রিটিশ সরকার আগামী বছর এই মর্মে একটি আইন পাশ করতে যাচ্ছে যে, গাড়ি চালানোর সময় চালকেরা মোবাইল ফোন ধরতে ও ব্যবহার করতে পারবেন না। এই আইন পাশ হলে আইনের এই ফাঁকটি বন্ধ হবে যে, গাড়ি চালকেরা ছবি তোলা কিংবা একটি খেলার জন্য মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন। তবে চালকেরা পথিমধ্যে পড়া টেইকওয়ের বিল পরিশোধে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। এখন গাড়ি চালানোর সময় ফোন করা এবং মেসেজ পাঠানো নিষিদ্ধ হচ্ছে। হাতের ব্যবহার ছাড়া মোবাইল ব্যবহার অর্থাৎ একটি ফোন ক্রাডলে সেট-ন্যাভ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হলেও মন্ত্রীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট বলেছে, নতুন আইনের অধীনে গাড়ি চালকেরা হাতের ব্যবহারমুক্ত যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন।
রোডস মিনিষ্টার ব্যারোনেস ভেরে বলেন, হুইলের পেছনে হাতে ধারণকৃত ফোনের ব্যবহার মনোযোগ বিনষ্টকারী ও বিপজ্জনক। এক্ষেত্রে চালকেরা শাস্তি এড়ানোর নানা অজুহাত কাজে লাগাতে পারে।
আইনের পরিবর্তন যুক্তরাজ্যব্যাপী প্রযোজ্য হবে এবং আলোচনার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে আগামী বছরের শুরুতে এটা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোড পুলিশিংয়ে নেতৃত্বদানকারী ‘ন্যাশনাল পুলিশ চীফসেজ কাউন্সিল’- এর চীফ কনস্টেবল এন্থনি ব্যানঘাম বলেন, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহার অবিশ্বাস্যভাবে বিপজ্জনক এবং এতে যেভাবে ড্রাইভিং থেকে মনোযোগ সরে যায়, তা চিরতরে জীবন বদলে দিতে পারে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অবৈধভাবে যারা হাতে ধরা মোবাইল ব্যবহার করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে পুলিশ। আইন লঙ্ঘনকারী চালকদের ৬ পেনাল্ট্রি পয়েন্ট সহ ২০০ পাউন্ড জরিমানা দিতে হবে। ২০১৯ সালের ব্রিটেনের সড়কে ৬৩৭ টি হতাহতের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ১৮ জন নিহত ও ১৩৫ জন গুরুতর আহত হয়। এসব দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে গাড়ি চালকদের মোবাইল ফোন ব্যবহারও দায়ী বলে পরিলক্ষিত হয়।
এ অবস্থায় চালকেরা তাদের দায় এড়াতে এই বিতর্ক জুড়ে দিয়েছেন যে, গাড়ি চালানোর সময় ফিল্মিং বা ছবি তোলা বর্তমান আইনের সাথে ম্যাচ করবে না, যেক্ষেত্রে একটি যন্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে, যা দিয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ সৃষ্টি করা হয়।
২০১৯ সালে রামসে ব্যারেটো-কে তার ফোনের মাধ্যমে উত্তর লন্ডনের একটি দুর্ঘটনার ছবি তোলার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। তবে ৫১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি আপীল করে শেষ পর্যন্ত ছাড়া পান।
হাইকোর্টের দু’জন জজের দেয়া রুলিংয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার সংক্রান্ত ১৬ বছরের পুরোনো আইনের সমালোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, আইনটি মোবাইল ফোনের স্মার্টফোনে পরিবর্তিত হওয়ার সাথে তাল মেলাতে ব্যর্থ।
আরএসি’র রোডস্ পলিসির প্রধান নিকোলাস লাইয়েস বলেন, আইনের এই ফাঁক বন্ধ হওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছি। এই ফাঁক ফোকর ব্যবহার করে ২০২০ সালে গাড়ি চালানোর সময় গাড়ি চালকেরা হাতে ধারনকৃত মোবাইল ফোন নানা ভাবে ব্যবহার করেছে।