ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে ওআইসির কঠোর প্রতিবাদ
ফ্রান্সে শেষ নবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) অবমাননা করে বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ অব্যাহত রাখার ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ওআইসি। মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষের এমন ধারাবাহিক অবমাননাকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ওআইসি বলেছে, নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) ও ইসলাম ধর্মের প্রতীকগুলো অবমাননা করে মুসলমানদের অনুভূতিতে ধারাবাহিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামের ধর্মীয় অনুভূতির অবমাননা ও কটূক্তি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ইসলাম অবমাননার পক্ষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেয়া শক্ত অবস্থানেরও সমালোচনা করেছে ওআইসি।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন করতে ফরাসি সরকারের দায়িত্বশীল কিছু ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য সবার মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে, যা মুসলিমদের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক বিনষ্ট করবে এবং দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সবার মধ্যে ঘৃণ্য মনোভাব ছড়িয়ে দেবে। ধর্মের নামে যেকোনো সন্ত্রাসী হামলারও তীব্র নিন্দা জানানো হয় ওআইসির বিবৃতিতে।
গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসের শহরতলী এলাকায় এক স্কুলশিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তিনি চেচেন জাতিগোষ্ঠীর এবং জন্ম রাশিয়ার মস্কোতে। নিহত ওই শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন।
‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীদের মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন দেখিয়ে ছিলেন। তারপর তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির অন্তত ৫০টি মসজিদ ও মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায়।
সাড়ে পাঁচ বছর আগে হজরত মোহাম্মদ (সা.) বিতর্কিত কার্টুন ছাপানোর পর ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। আবারও সেটি ছাপিয়েছে ম্যাগাজিনটি। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, হজরত মুহাম্মদের (সা.) বিতর্কিত কার্টুন ছাপানো নিয়ে নিন্দা জানাবেন না।
একই সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। মোহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়া এবং শার্লি এবদোর পক্ষে অবস্থান নেয়ার পর মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে মুসলিম দেশগুলো।