ম্যাক্রঁকে ‘মানসিক চিকিৎসা’ করাতে বললেন এরদোয়ান
ম্যাক্রঁ নামক ব্যক্তির ইসলাম এবং মুসলিমদের নিয়ে সমস্যাটা কোথায়?
ইসলাম ও মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করে ধারাবাহিক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ’র মানসিক চিকিৎসা দরকার। শনিবার তুরস্কের কায়সারি শহরে নিজ দল একে পার্টির এক প্রাদেশিক সমাবেশে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেন এরদোয়ান। সম্প্রতি ফ্রান্সের একাধিক শহরে উঁচুউঁচু ভবনের দেয়ালে মুসলমানদের অবমাননাকর বিভিন্ন ব্যানার স্থাপন করা হয়। সারা বিশ্ব থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হলে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল বলেন, ‘তার দেশ ইসলাম অবমাননাকারী কার্টুন প্রচার থেকে বিরত থাকবে না’।
এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ধর্ম হিসেবে ইসলাম আজ বিশ্বজুড়ে সংকটে রয়েছে। শুধুমাত্র যে আমাদের দেশেই যে এই ধরনের ঘটনা চোখে পড়ছে তা কিন্তু নয়। তবে আমরা কোনোভাবেই ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে কাউকে আঘাত হানতে দেব না। নতুন করে অভিযান চালিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও পাবলিক সেক্টর থেকে ধর্মকে সরিয়ে দেওয়া হবে। নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য যেসব স্কুল ও মসজিদ বিদেশে থেকে টাকা পায় তাদের ওপর কড়া নজরদারি চলবে।’
এরদোয়ান বলেন, ‘ইসলাম সংকটে বলে মাক্রোঁ যে শুধু ধর্মকে অশ্রদ্ধা করেছেন তাই নয়, খোলাখুলি উসকানিও দিয়েছেন। মাক্রোঁ এসব কথা বলে তাঁর ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ইসলামের কাঠামো নিয়ে কথা বলার তিনি কে? মাক্রোঁ যে সব বিষয়ে কিছুই জানেন না, সেই সব বিষয়ে বলার আগে যেন ভালো করে বিষয়টা জেনে নেন। আমরা চাই তিনি দায়িত্বশীল প্রেসিডেন্টের মতো কাজ করুন। ঔপনিবেশিক গভর্নরের মতো নয়।’
একে পার্টির এক সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, ‘ম্যাক্রঁ নামের এই লোকটির ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে সমস্যাটা কোথায়? মানসিক পর্যায়ে ম্যাক্রঁ’র চিকিৎসা দরকার। মুসলমানদের প্রতি ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মনোভাবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে এর চেয়ে বেশি কী বলা যায়, যিনি বিশ্বাসের স্বাধীনতার বিষয়টি বোঝেন না এবং তার দেশে বসবাসরত ভিন্ন বিশ্বাসের লাখ লাখ মানুষের সাথে এই ব্যবহার করেন?’
উল্লেখ্য, মাক্রোঁ ও এরদোগানের সম্পর্ক এমনিতেই খুব ভালো নয়। যেখানেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন সেখানেই ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। তুরস্ক ও ফ্রান্স উভয়েই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। তবে দেশ দুটির মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরস্পর বিরোধী অবস্থান রয়েছে। এসব ইস্যুর মধ্যে রয়েছে সিরিয়া, লিবিয়া, পূর্ব ভূমধ্যসাগরের কর্তৃত্ব এবং নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের বিরোধ।