যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হতে অভিবাসীদের বেতনের সর্বনিম্ন সীমা হ্রাস
ব্রিটিশ সরকার যুক্তরাজ্যে সেটলড্ অর্থাৎ স্থায়ী হওয়ার জন্য শর্ত হিসেবে বেতনের সর্বনিম্ন পরিমান ৩০ শতাংশ হ্রাস করে তা ২০৪৮০ পাউন্ড করেছে। আগে এটা ছিলো ৩৫৮০০ পাউন্ড। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অষ্ট্রেলিয়ান স্টাইলের অভিবাসন সিস্টেমে ৬ বছর পর স্থায়ী হয়ে শেষে নাগরিক হওয়া যাবে।
এই বিধিমালা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। গত বৃহস্পতিবার হোম অফিস কর্তৃক অনেকটা নিরবে প্রকাশিত এই নীতিমালায় সাধারণ সর্বনিম্ন বেতনের সীমা ২৫৬০০ পাউন্ডে নামিয়ে আনার মাধ্যমে প্রকারান্তরে এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, নিম্ন বেতনের অভিবাসী শ্রমিকেরা যুক্তরাজ্যে আবশ্যকীয় আবদান রাখছে।
তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে ২০১১ সালে ৩৫৮০০ পাউন্ডের সর্বনিম্ন বেতন সীমার শর্ত চালু করেন অভিবাসীদের স্থায়ী হওয়ার জন্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের অভিবাসন সীমিতকরণের লক্ষ্য অর্জনে তার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে থেরেসা মে এটা করেন। অবশ্য এ লক্ষ্য এ পর্যন্ত অর্জিত হয়নি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মাইগ্রেশন অবজারভেটরী’ এটাকে নেট মাইগ্রেশন টার্গেটের কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে উল্লেখ করে। ডেপুটি ডাইরেক্টর রব ম্যাকনীল বলেন, তারা স্বীকার করছেন যে, সরকার ১০ হাজার লোককে বহিষ্কারের লক্ষ্যে যে সব হাতিয়ার ব্যবহার করেছে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভোঁতা অস্ত্রটি ছিলো সর্বনিম্ন বেতনের এই শর্তটি।
২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে ডিসেম্বর মাসে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের শীর্ষ উপার্জনকারীদের প্রায় এক চতুর্থাংশই অভিবাসী। এর ফলে ২০১৬ সালে ইইউ রেফারেন্ডামের সময় বরিস জনসন বলেন, ইইউ অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যকে সুদীর্ঘকাল যাবৎ তাদের নিজ দেশের অংশ হিসেবে গণ্য করতে সক্ষম হচ্ছেন।
তিনি এই বলে নিশ্চয়তা প্রদান করেন যে, যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগের পর অভিবাসন তার পরিকল্পনার আওতায় আসবে। অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইউকে বলেছে যে, সর্বনিম্ন বেতনের শর্তসহ অভিবাসন নীতিমালার দ্বারা তারা বিব্রত। এই নীতিমালা ইতোমধ্যে সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর সুযোগ সুবিধা আরো বৃদ্ধি করেছে। রিফিউজী এন্ড মাইগ্রেন্ট রাইটস্ প্রোগ্রামস্-এর পরিচালক স্টীভ ভালদেজ-সিমন্ডস বলেন, দুঃখজনকভাবে এই সর্বশেষ পদক্ষেপে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন পদ্ধতিতে সুযোগসুবিধার সমতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোন নতুন সংকেত কিংবা দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতীয়মান হয়নি। এতে শ্রেণী কিংবা বর্ণ নির্বিশেষে সকল নারী, পুরুষ ও শিশুদের অধিকার ও মানবিক মর্যাদার প্রতি সম্মানও প্রদর্শিত হয়নি।