চাপে শ্রমবাজার
যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে
নতুন করে ২ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ কর্মহীন
কভিড-১৯ মহামারীর কারণে যুক্তরাজ্যের শ্রমবাজারে তৈরি হওয়া ক্ষত সারছেই না; বরং দিন দিন তা আরো বেড়ে চলেছে। সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত প্রান্তিকে দেশটিতে বেকারত্ব রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের (ওএনএস) প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যে নতুন করে ২ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে, যা ২০০৯ সালের মে মাসের পর সর্বোচ্চ। বর্তমানে দেশটিতে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে চাকরি থেকে ছাঁটাই হয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার। এটিও দেশটির জন্য নতুন রেকর্ড।
সেপ্টেম্বর শেষে যুক্তরাজ্যে বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। ওএনএসের প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, গত প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে ১৬-২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে চাকরিরতর সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৩৫ লাখে নেমে এসেছে।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট স্থবিরতায় যাদের অস্থায়ী ছুটিতে পাঠানো হয়েছে অথবা যারা পূর্ণকালীন চাকরি হারিয়েছেন, তাদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের সরকারি কর্মসূচির মেয়াদ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ ঘোষণার পর অর্থনীতিবিদরা ধারণা করেছিলেন, এ পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব কমে আসবে।
কিন্তু ওই ঘোষণার মাত্র দিন দুয়েকের মধ্যেই রেকর্ড বেকারত্বের ঘোষণা দিল ওএনএস। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি কর্মসূচিটির মেয়াদ অক্টোবরেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কোম্পানিগুলো সে হিসাব করেই কর্মী ছাঁটাই করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণাটি আরো আগে এলে হয়তো এত বেশিসংখ্যক কর্মীকে চাকরি হারাতে হতো না।
সামনের দিনগুলোয় যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে অস্থায়ী ছুটিতে থাকা কর্মীদের জন্য সরকারের সহায়তা কর্মসূচির মেয়াদ বৃদ্ধি শ্রমবাজারে কিছুটা আশার সঞ্চার করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের কর্মসূচির মেয়াদ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক। এতে কোম্পানিগুলো নতুন করে পরিকল্পনা সাজানোর প্রেরণা পাবে।