চুয়াডাঙ্গায় নিহত শিবিরকর্মীর দাফন সম্পন্ন : রোববার ৪ জেলায় হরতাল

Shibirচুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের গুলিতে নিহত শিবিরকর্মী রফিকুলের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১২টায় সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার আগে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা নিহত রফিকুলের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আমির আনোয়ারুল হক মালিক, সেক্রেটারী মওলানা আজিজুর রহমান, সহ-সেক্রেটারী রুহুল আমিন, নায়েবে আমির আবদুল খালেক, থানা আমির আবদুর রউফ, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি বেলাল হোসাইন, মেহেরপুর শিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া শিবিরের সভাপতি সোহেল রানা, শিবিরের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন, ঝিনাইদাহ শিবিরের সভাপতি শেখ শাহাজালাল প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আমাদের সাথী রফিকুলকে বিনা দোষে পুলিশ পিছন দিক থেকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে। এর বিচার বাংলার জমিনে করা হবে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয় আপনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী জনগণের রক্ষার দায়িত্ব আপনার কিন্তু আপনি সরকারকে খুশি করার জন্য এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। এছাড়াও রোববারের অর্ধদিবস হরতাল সফল করার জন্য নেতা কর্মীদের মাঠে থাকার আহবান জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে নিহত রফিকুলের দরিদ্র পিতা ভ্যানচালক দেলোয়ার হোসাইন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলের কোন অপরাধ ছিল না। আমার ছেলেকে হত্যা করে এ আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। হাজারো রফিকুল জন্ম নেবে। পরে নিহতের লাশ চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বোয়ালিয়া গ্রামে ঈদগামাঠ-সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানায়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান বুলাসহ জাময়াত-শিবির ও স্থানীয় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়। অপ্রীতকর ঘটনা এড়াতে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকবাসী জানান, চুয়াডাঙ্গা সদরের বোয়ালিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসাইন ও রহিমা খাতুনের দুই ছেলে। বড় ছেলে রফিকুল ও ছোট ছেলে রানা। রফিকুল দুই বছর আগে শিবিরের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। মেধাবী এ ছাত্র এসএসসি ও এইসএসসিতে জিপিএ-৫ পান। তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে অর্নাস প্রথম বর্ষে অর্থনীতি বিষয়ে লেখাপড়া করত। ছোট ভাই রানা টাইলস মিস্ত্রির কাজ করে বড় ভাই রফিকুলের লেখাপড়ার খরচ যোগাত। দরিদ্র বাবা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। ভালো ছেলে হিসাবে এলাকায় রফিকুলের বেশ সুনাম ছিল। সেই কারনে পরিবারের সদস্যরা রফিকুলকে নিয়ে উচ্চ আশা দেখতে শুরু করেন। কিন্তু পুলিশের এক গুলিই তাদের স্বপ্ন ওলটপালট করে দেয়। পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার দিন বেলা ১২টায় মার হাতে খাবার খেয়ে রফিকুল বাড়ী থেকে বের হন। পরে মিছিলে যোগ দিতে যান দর্শনায়। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় ছাত্রশিবির একটি মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে নিহত হয় রফিকুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button