শামীমা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নন: ব্রিটিশ সুপ্রীম কোর্ট

‘শামীমাকে নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারে লড়াইয়ের জন্য ব্রিটেনে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়া হোক’

ব্রিটিশ সুপ্রীম কোর্ট বলেছে, শামীমা বেগমকে যদি ব্রিটেনে ফিরে আসার অনুমতি দেয়া হয় তবে সরকার এটা ধরে নিতে পারে না যে, সে একটি সন্ত্রাসের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এই সাবেক আইএসআইএস গৃহবধূর পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তার আইনজীবিরা বলেন যে, তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে আপীলের জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেয়া উচিত।

১৫ বছর বয়সে সিরিয়ায় গমনের পর তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করা হয়। লর্ড প্যান্নিক বিচারকদের বলেন যে, যদি অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তবে বেগমের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করা উচিত, কারণ, তাকে একটি অর্থবহ আপীলের সুযোগ দিতে অস্বীকার করা হয়েছে। এ অবস্থায়, একটি সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত তাকে বঞ্চিতকরণের আদেশ আইনানুগভাবে অব্যাহত থাকতে পারে না।
শামীমা বেগম বর্তমানে সিরিয়ার নারী ও শিশুদের একটি শিবিরে আটক রয়েছে, যে শিবিরে আইএসআইএস এর অঞ্চল ত্যাগকারীদের আটক রাখা হয়েছে। লন্ডনের বাসিন্দা ও স্কুলছাত্রী শামীমা বেগম আইএসআইএস অধিকৃত অঞ্চলে প্রায় ৪ বছর বসবাস করে, যতক্ষণ না ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে একজন সাংবাদিক তার সন্ধান পান।
তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ এর কিছুকাল পর জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তিতে শামীমার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেন। সাজিদ জাভিদের উত্তরসূরী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের প্রতিনিধিত্বকারী জনৈক ব্যারিস্টার ইতোপূর্বে সুপ্রীম কোর্টকে বলেন যে, শামীমা বেগম নিজেকে আইএসআইএস-এর জড়িত করেছে এবং তাই ব্রিটেনে তার প্রত্যাবর্তন ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। কিন্তু শামীমার প্রতিনিধিত্বকারী লর্ড প্যান্নিক তার নাগরিকত্ব্রে ব্যাপারে যে কোন ভবিষ্যত আপীলে ঐসব বক্তব্যের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
এর জবাবে প্রীতি প্যাটেলের ব্যারিস্টার বলেন, এটা মনে করা যায় না এবং এটা যে কোন আপীলে নিশ্চিয়ই একটি ইস্যু হবে যে, শামীমা সিরিয়ায় ভ্রমণ করেছিলেন এবং প্রমাণ রয়েছে যে, তিনি নিজেকে আইএসআইএস-এর সাথে জড়িয়েছিলেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তিনি একটি অব্যাহত হুমকির সৃষ্টি করেন। তিনি আরো বলেন, ২০১৫ সালে ২জন স্কুলের বন্ধুর সাথে যুক্তরাজ্য ত্যাগের পূর্বে সুরক্ষাকারী ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলো এবং তার বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় আনা উচিত।
অপরদিকে, লর্ড প্যান্নিক ২০১৯ সালের হোম অফিসের একটি ডকুমেন্টের প্রতি ইংগীত করে বলেন, এটা কোন বিষয় নয় যে, যে কেউ সিরিয়ায় ভ্রমণ করলেই এবং আইএসআইএস-এর সাথে যোগাযোগ করলেই একটি হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
হোম অফিসের ঐ ডকুমেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে লর্ড প্যান্নিক বলেন, ২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া ও ইরাকে সংঘাতে জড়িত হতে যে ৯০০ ব্যক্তি ব্রিটেন ত্যাগ করেছিলো তাদের এক পঞ্চমাংশ নিহত হয়েছে এবং ৪০ শতাংশ ফিরে এসেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button