ব্রেক্সিট নিয়ে টানাপোড়েন: যুক্তরাজ্য তার সার্বভৌমত্ব বিক্রি করবে না
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া সমুদ্রে মাছ ধরার কোটাকে হাস্যকর বলে ওড়িয়ে দিয়েছে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে এ বিষয়ে আরো চিন্তা-ভাবনা করারও আহ্বান জানিয়েছে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী বানিজ্য আলোচনার শেষ সপ্তাহে কী ঘটবে এমন উভয়পক্ষে বিরাজমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাজ্য প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাজ্যের পানি সীমার মাছ ধরর জন্য মাত্র শতকরা ১৮ ভাগ শেয়ার দেবে- এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান আলোচক লর্ড ফ্রস্টের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য মনে করছে যে, ব্যবসা ও অর্থনীতির ওপর প্রভাবের ব্যাপারে কঠিন সতর্কবানী সত্বেও একটি চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট অপ্রশংসনীয়।
আলোচকদের সাথে ঘনিষ্ট একটি সূত্র অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য কোনভাবেই তার সার্বভৌমত্ব বিক্রি করবে না। সূত্র জানায়, আগামী দিনগুলোতে আমরা সৃজনশীলতা ও তীব্রতা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবো। আমরা আশা করি যে, ইইউ নতুনভাবে কিছু চিন্তাভাবনা নিয়ে আসবে, কারণ আমরা যা দেখতে পাচ্ছি, তা কার্যকর নয়। তাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করতে যাচ্ছি না।
জনৈক সরকারী সূত্র জানায়, এসব পরিমাণ (মাছ ধরা সংক্রান্ত) হাস্যকর এবং ইইউ পক্ষ এটা ভালোভাবেই জানে যে, আমরা কখনো এটা মেনে নেবো না। আমরা যে একটি স্বাধীন জাতি, মনে হয়, তারা প্রায়োজনীয় পরিবর্তনের পরিমাণ অনুধাবনে ব্যর্থ হচ্ছে।
৩১ ডিসেম্বর ট্রানজিশন পরিয়ড শেষ হওয়ার ঠিক এক মাসেরও কিছু বেশীকাল আগে লন্ডনে মুখোমুখি ব্রেক্সিট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে একটি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে অন্যান্য ইইউ দেশসমূহে ক্রমবর্ধমান সংশয় লক্ষ্য করা গেছে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল দেশের মন্ত্রীবর্গকে এমনকি এই শেষ মুহূর্তেও ওয়াক অ্যাওয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার ব্রেক্সিট আলোচনার চূড়ান্তকরণ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু একই সময়ে আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে আমাদের দেশ ট্রানজিশন সমাপ্তির জন্য আমাদের প্রস্তুতি প্রত্যাশা করে।
লর্ড ফ্রস্ট গত শুক্রবার বলেন, আপনারা আপনাদের কোম্পানীগুলোকে ইইউ-এর কমন মার্কেটে প্রবেশের জন্য বলেছেন, তখন আমরা আমাদের জেলেদের আপনাদের পানি সীমায় প্রবেশ করতে বলবো – এটাই তো স্বাভাবিক। তবে এটা ঠিক নয়, এর বাস্তব পরিনতি রয়েছে। আমাদের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, একটি ব্যাপক ও নীতিসিদ্ধ ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং আমাদের মাছ ধরার পানিসীমা নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
চুক্তি হচ্ছে কি হচ্ছে না-এ নিয়ে ব্রিটিশ সমুদ্রবন্দরগুলোতে বিশৃংখল অবস্থা বিরাজ করছে। সর্বোপরি, চুক্তি না হওয়া ব্রিটিশ অর্থনীতিকে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।