শেষ মুহূর্তে বোঝাপড়ার ক্ষীণ আশা

ইইউ-ব্রিটেন কোনো বড় ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়

বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা চালিয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের মধ্যে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয় নি। ইইউ থেকে পাকাপাকি বিদায়ের মাত্র চার সপ্তাহ আগে এমন অনিশ্চয়তার ফলে দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে। আলোচনায় অগ্রগতির অভাব, ব্রিটিশ সরকারের বিতর্কিত আইন অনুমোদনের উদ্যোগ ও বাকযুদ্ধ সত্ত্বেও মধ্যস্থতাকারীরা সপ্তাহান্তে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে সাফল্যের ক্ষীণ সম্ভাবনা এখনো উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

শেষ প্রহরে ঐকমত্যের আশাও কমে চললেও দুই পক্ষ এখনো হাল ছেড়ে দেয় নি। ইইউ পক্ষের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে শুক্রবার ব্রাসেলসে ২৭টি ইইউ দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিটেনের সামনে আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে নিজস্ব বক্তব্য পেশ করছেন। তিনি ছয় দিন ধরে লন্ডনে আলোচনা চালিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতির মুখ দেখেন নি। বৃহস্পতিবার ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্য স্টেফান ডে রিংক জানিয়েছিলেন, যে দুই পক্ষের মধ্যে এখনো মৌলিক মতপার্থক্য রয়ে গেছে। তার মতে, দুই পক্ষের কঠিন পরিশ্রম সত্ত্বেও ফলাফল এখনো অনিশ্চিত। তবে ম্যারাথন দৌড়ের মতো একেবারে শেষ মুহূর্তে সাফল্যের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন নি তিনি। ইইউ কূটনীতিকদের মতে, ব্রিটেনকে আর নতুন করে কোনো ছাড় দেবার সুযোগ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে।
এদিকে ব্রিটেনের সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনেছে। সরকারি সূত্রের দাবি, ইইউ একেবারে শেষ মুহূর্তে নতুন বিষয় অন্তর্গত করছে। এমন পরিস্থিতিতে সাফল্যের সম্ভাবনা কমে চলেছে বলে সরকার মনে করছে। ইইউ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার পথে আরও একটি বাধার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। ইইউ-র প্রতিবাদ সত্ত্বেও ব্রিটেনের সরকার আগামী সপ্তাহে সংসদে বিতর্কিত একটি আইন অনুমোদন করাতে চায়। সেই আইন কার্যকর হলে ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভাঙা হবে। সে ক্ষেত্রে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও আইরিশ প্রজাতন্ত্রের স্থলসীমানায় জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিটিশ সংসদে নতুন আইনের খসড়া পেশ করে ব্রেক্সিট চুক্তির আরও কিছু শর্ত লঙ্ঘনের উদ্যোগের পূর্বাভাষ দিচ্ছে বরিস জনসনের সরকার। সে ক্ষেত্রে ইইউ-ব্রিটেন বাণিজ্য চুক্তি সম্ভব হলেও ইইউ পার্লামেন্টে অনুমোদন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ব্রিটেনের সার্বিক মনোভাবের ফলে কয়েকটি ইইউ দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডস চুক্তির স্বার্থে ব্রিটেনকে কোনো বড় ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়। বার্নিয়ে যাতে নিজের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম না করেন, সে বিষয়ে কড়া নজর রাখছে এই দুই দেশ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button