মালালার ঘটনা পশ্চিমা বিশ্বের সাজানো নাটক !
পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক ভাবে আলোচিত একটি নাম এখন মালালা। পশ্চিমা বিশ্বের প্রচারণা্য যিনি এখন অনেকটা জঙ্গীসংগঠন প্রতিরোধের আইকন হিসাবেই প্রতিষ্ঠা পেতে চলেছেন। এমনকি এ বছর শান্তিতে নোবেল তালিকায় মালালার নামও ছিলো শীর্ষে।
পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় তালেবান জঙ্গিদের আক্রমনে আহত হন ১৫ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী মালালার। তার মাথায় ও মুখে গুলি করে তালেবান। আর এরপর পাকিস্তান ও পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের ডাক্তাররা সার্জারি করে মালালাকে বাঁচাতে সক্ষম হন – যা ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয় বিশ্বের প্রায় সব মিডিয়াতেই। আর এর পর থেকেই মালালা যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করছেন এবং নারী শিক্ষা বিস্তারে সেখানে কাজ করছেন।
তবে গনমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রকাশিত খবরের বাইরে পাকিস্হানের তথা বিশ্বের এক বিরাট জন গোষ্ঠীর কাছে তিনি একজন চরম ঘৃণিত ব্যাক্তি, যা বোঝা যায় সম্প্রতি প্রকাশিত পাকিস্তানের সবচে্যে ঘৃণিত ব্যাক্তির তালিকার দিকে লক্ষ করলে। পাকিস্তানের সবচে্যে ঘৃণিত দশ ব্যাক্তি তালিকায় উঠে আসে মালালার নাম।
আর এই ভিন্ন ধারণা পোষনকারীদের পক্ষের সমর্থনেই সম্প্রতি পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ডন অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মালালা ইউসুফজাইয়ের এ ঘটনাকে পশ্চিমা বিশ্বের সাজানো নাটক বলে দাবি করেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মালালার এ ঘটনা যা সারা বিশ্ব জানছে তা একটি আংশিক গল্প। পুরো ব্যাপারটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে সেদিন যে মালালাকে গুলি করা হয়েছিল তা পশ্চিমাদের মিডিয়ার সাজানো নাটক।
ডন ডটকম দাবি করে বলছে, মালালার বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে এ বছরের এপ্রিল মাসে তাদের একটি দক্ষ টিম পাকিস্তানের সোয়াত এলাকায় পাঁচ মাসের অনুসন্ধানী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
তাদের দাবি মালালা সম্পর্কে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যগুলো প্রমাণসহ সারা বিশ্বকে চমকে দেওয়ার মত।
ডন ডটকমের দেওয়া তথ্যগুলো নিচে উপস্থাপন করা হলো-
মালালা সোয়াতে জন্মগ্রহণ করেনি এমনকি তিনি একজন পুশতুন না। সোয়াতের বেসরকারি এক হাসপাতালের চিকিৎসক ইমতিয়াজ আলী খানজাই ডনের প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তার কাছে ডিএনএ আছে যা প্রমাণ করে মালালা পুশতুন না।
একটি রিপোর্ট দেখিয়ে তিনি জানান, তিনি মালালার ডিএনএ সংগ্রহ করেছেন। সে সময় মালালা শিশু ছিল। তখন তিনি ওই ক্লিনিকে কানের সমস্যা নিয়ে তার বাব-মায়ের সাথে এসেছিলেন।
ডাক্তার তার নমুনা থেকে ডিএনএ পরিক্ষার মাধ্যমে জানান, মালালা একজন কওকেশিয়ান। তারা সম্ভবত পোল্যান্ড থেকে আগত।
এ তথ্য উৎঘাটনের পর ডাক্তার মালালার বাবাকে ডেকে পাঠান ও মালালার ব্যাপারে বিস্তারিত জিজ্ঞাসা করলে মালালার বাবা স্তম্ভিত হয়ে পড়েন এবং তোতলাতে শুরু করেন।
মালালার বাবা সে ডাক্তারকে বলেন, “মালালার প্রকৃত নাম জেইন। এবং ১৯৯৭ সালে সে হাঙ্গেরিতে জন্মপগ্রহণ করে।”
তার প্রকৃত বাবা-মা খ্রিষ্টান মিশনারি ছিল যারা ২০০২ সালে সোয়াতে বেড়াতে এসেছিল এবং মালালাকে উপহার হিসেবে তার বর্তমান বাবা-মায়ের কাছে রেখে যায় যখন তারা গোপনে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।
যখন ডনের প্রতিবেদক ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন সে মালালার আসল পরিচয় এখন প্রকাশ করছেন, তখন ডাক্তার বলেন, “তিনি মনে করেন মালালাকে পাকিস্তানের বিপক্ষে দাঁড়াতে পরিকল্পিতভাবে পাঠানো হয়েছিল।”
ডাক্তার বলেন, “ আমার কাছে মালালার কর্ণমলিও আছে। আমি প্রমাণ দেখাতে পারবো মালালাকে যে যুবক গুলি করেছেন তিনি পুশতুন ছিলেন না।
গুলিবর্ষণকারীর ডিএনএ পরীক্ষা করে ডাক্তার আবিষ্কার করেন, সে মূলত ইটালি থেকে এসেছে।
ডাক্তার বলেন, “আমি ২০১২ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ বিষয়গুলো জানিয়ে ইমেইল করি।”
এর কয়েক দিন পর তার ক্লিনিকে পুলিশ অভিযান চালায়। তিনি তখন সৌদি আরবে সেখানকার রাজ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের কর্ণমল সংগ্রহের জন্য গিয়েছিলেন। তার কয়েকজন কর্মচারী সে সময় পুলিশের মাধ্যমে নির্যাতিত হয়েছিলেন। কারণ তারা জানতে চেয়েছিলেন তিনি কর্ণমলের নমুনাগুলো কোথায় রেখেছিলেন।
এ বছরের জুন মাসে ডাক্তার আইএসআইয়ের একজন তরুণ অফিসারের কাছে গিয়েছিলেন এবং ওই অফিসার পুলিশি অভিযানের জন্য তার কাছে ক্ষমা চান।
অফিসার ডাক্তারকে বলেন, “আইএসআই মালালার আসল পরিচয়ের ব্যাপারে সতর্ক আছে। অনেক অনুরোধের পর ডাক্তার ওই আইএসআই অফিসারের মোবাইল ফোনের নাম্বার দিয়ে দেন।”
এরপর সেই ডাক্তার আইএসআই এর অফিসারের নাম্বার দেন ডনের প্রতিবেদককে। ডনের প্রতিবেদকের সাথে অফিসার দেখা করেন সোয়াতের একটি পরিত্যক্ত স্কুলে।
আইএসআই এর সেই অফিসার এবার আসল ঘটনা ফাঁস করে দেন। তিনি ডনের প্রতিবেদককে জানান, মালালার ওপর হামলার ঘটনা পাতানো হয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে। উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আক্রমণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পথ পরিষ্কার করতে পুরো ঘটনাটি পাকিস্তান ও মার্কিন এজেন্সির মাধ্যমে সাজানো হয়েছিল।
অফিসার জানান, “এটা একটা নাটক। পাকিস্তান সেনাবাহিনী উত্তর ওয়াজিরিস্তান আক্রমণের একটি অজুহাত দাঁড় করাতে এটি মঞ্চস্থ করা হয়েছিল।”
মার্কিন ও পাকিস্তানি এজেন্সির মাধ্যমে যে মালালাকে গুলি করা হয়েছে তার প্রমাণ কী ডনের প্রতিবেদক জানলে চাইলে আইএসআই এর অফিসার প্রতিবেদককে ‘টিসুনামি মোমি’ নামে একটি পাণ্ডুলিপি দেন।
সিআইএর এজেন্ট লিভ ফিস ও লাহোরভিত্তিক আইএসআই এর এজেন্ট ওয়েল গুল মালালার বিষয় ও অভিযান নিয়ে টুইটারে যে সাংকেতিক আলোচনা করেছেন তার স্ক্রিনশর্ট নিয়ে অনুবাদ করেছেন পাকিস্তানের বিখ্যাত ভাষাবিদ মুনতানসার হোসেন তারার। কথোপকথনের তথ্য নিয়ে টিসুনামির পাণ্ডুলিপি করা হয়েছে বলে ডন প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
পাণ্ডুলিপির তথ্যমতে,
“অক্টোবর ১, ১৯৯৭ : হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে হাঙ্গেরিয়ান বাবা-মায়ের ঘরে মালামা জন্ম গ্রহণ করেন। তার নাম জেইন।
অক্টোবর, ৪, ২০০২: তার বাবা-মা সিআইয়ের সাথে যুক্ত হন। এবং তাদের একটি সংক্ষিপ্ত সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
অক্টোবর, ৭, ২০০৩: তারা পাকিস্তানে ঢুকেন এবং সোয়াতে একটি এনজিওতে কাজ শুরু করেন। সে সময় তারা আইএসআইয়ের একজন লো-লেভেল এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তিনি পুরো পরিবারকে খ্রীষ্টীয় ধর্মে ধর্মান্তারিত করেন। তারা জেইনকে তার কাছে রেখে যান। পরবর্তীতে ওই এজেন্ট জেইনের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মালালা।
অক্টোবর ৩০, ২০০৭: মালালা ব্লগে লেখা শুরু করেন এবং সেখানে তিনি সোয়াতের চরম্পন্থীদের অস্ত্র থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
অক্টোবর ২১, ২০১১: চরমপন্থীরা তাকে আনুরোধ করেন এ ধরনের ব্লগ না লিখতে।
অক্টোবর ১, ২০১২: সিআইএ নিউ-ইউর্কে বসবাসকারী ইটালিয়ান-আমেরিকান বংশদ্ভূত রবার্ট নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। তাকে গুলি চালানোর ওপর স্বল্পমেয়াদে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
অক্টোবর ৭ ২০১২: সিআইএ মালালার ওপর মিথ্যা গুলিবর্ষণের জন্য আইএসআইয়ের সাথে পরিকল্পনা শেয়ার করে এবং এ ব্যাপারে মালালা ও তার পরিবারকে ব্রিফ করা হয়।
অক্টোবর ১১, ২০১২: ইটালিয়ান-আমেরিকান এ ব্যক্তি সোয়াতে প্রবেশ করে একজন উজবেক হিসেবে।
অক্টোবর ১২, ২০১২: রবার্ট নামের ওই ব্যক্তিকে একটি বন্দুক সরবারহ করা হয় যার মধ্যে কোন গুলি ছিল না। বন্দুকধারী মালালার স্কুলে মিছেমিছি গুলি চালায়। এ সময় মালালা নিজেকে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ভান করে। মালালার কাছে আগে থেকে টমেটোর সস রাখা ছিলো যা সে শরীর ও মুখে মেখে নেয়। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একটি অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছায় এবং মালালাকে নিয়ে যায়। এরপর পশ্চিমা মিডিয়াগুলো সারাবিশ্বে প্রচার করে মালালাকে তালেবানরা গুলি করেছে। যা খুবই হাস্যকর।