টিকা উদ্ভাবক মুসলিম দম্পতিকে ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ ঘোষণা
ফাইজার বায়োএনটেকের করোনাভাইরাসের টিকা তথা প্রথম টিকা উদ্ভাবক তুরস্ক বংশোদ্ভূত মুসলিম দম্পতি ড. উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসিকে ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। করোনাভাইরাস টিকার উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের কোটি মানুষের হৃদয়ে আশা জাগিয়ে তুলেছেন এই মুসলিম দম্পতি। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে তাদের টিকা ৯৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি এক প্রতিবেদনে জানায়, এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কোভিডের টিকা উদ্ভাবন করে এই দম্পতি অসাধারণ ব্যবসায়িক ও বৈজ্ঞানিক সফলতা অর্জন করেছে। ড. শাহিন বলেন, আমরা বিচলিত ছিলাম। পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাইরে লোকজন প্রথমবারের মতো টিকা নিচ্ছে বাস্তবিক দুনিয়ায় এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০০৮ সালে ওষুধ কোম্পানি বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা করেন ড. উগুর শাহিন ও তার স্ত্রী ড. ওজলেম তুরেসি। আমেরিকান অংশীদার ফাইজারের সঙ্গে মিলে পরীক্ষামূলক টিকা উদ্ভাবন করেন তারা।
তিন দফায় পরীক্ষার পর বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শাহিন আশা প্রকাশ করেছেন যে, তাদের চেষ্টা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকটের অবসান ঘটাতে পারবে। প্রথম টিকার উদ্ভাবক হিসেবে বিশ্বের দু’টি বিশ্বাসযোগ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছেন এই দুই মুসলিম দম্পতি। এর পুরো কৃতিত্ব ড. শাহিন ও ড. তুরেসির ওপর বর্তায়।
উল্লেখ্য, জার্মানির মেন্জ-এ বায়োএনটেক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা উগুর ও ওজলেম। ২০০৮-এ অস্ট্রিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ হুবেরের সঙ্গে বায়োএনটেক সংস্থা তৈরি করেন তারা। এই দম্পতির তৈরি বায়োএনটেকে এখন কাজ করেন ১৫শ’ কর্মী। ৫৫ বছর বয়সি শাহিনের জন্ম তুরস্কে। বাবা-মা’র সঙ্গে একসময় জার্মানিতে চলে আসেন তিনি।
৫৩ বছর বয়সি টুরেসির জন্ম জার্মানিতে। কিন্তু তাঁর বাবা-মা তুর্কি। হামবুর্গে পড়ালেখা করে, সেখানেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। ইমিউনোলজিস্ট টুরেসি ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিয়ে থাকেন৷
জন্মসূত্রে উগুর ও তুরেসি দুজনেই তুর্কি মুসলিম। শৈশব থেকেই মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখতেন উগুর। কোলঙের একটি হাসপাতালে কাজ করার সময় তুরেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। দুজনেরই স্বপ্ন ছিল ক্যান্সার চিকিত্সা নিয়ে গবেষণা করা। ক্যান্সারের চিকিত্সায় ইমিউনোথেরাপি নিয়ে তাদের সংস্থা গবেষণা এখনও চালাচ্ছে।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিজ্ঞানী উগুর শাহিন ও তুরেসিকে বিশ্ব দীর্ঘদিন মনে রাখবে। সংক্রামক রোগ ও টিউমারের চিকিৎসাক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করেছেন এ জুটি। জীবনের দীর্ঘ সময় ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনে কাজ করেছেন দুজন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে এ দুই বিজ্ঞানীর পরিবর্তিত জেনেটিক কোডের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উদ্ভাবন মানুষের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
Free-to-read: As the creators of the first Covid-19 vaccine to win approval by two of the world’s most credible regulators, the FT’s People of the Year award has gone to BioNTech’s Ugur Sahin and Ozlem Tureci https://t.co/OR207L1ESM
— Financial Times (@FinancialTimes) December 16, 2020