অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি : সামনে আরও কঠিন সময়
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে বলেছেন, নতুন অভিবাসী আইন অনুযায়ী তাঁর দেশে অবৈধ ব্যক্তিদের বসবাস করা আরও অনেক কঠিন হবে। প্রক্রিয়াধীন অভিবাসন বিল অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অভিবাসন মর্যাদার বিষয়টি পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া ভাড়াটেদের সম্পর্কে বাড়ির মালিকেরা একই ধরনের খোঁজখবর নেবেন।
প্রস্তাবিত নতুন আইনে অভিবাসনসংক্রান্ত মামলায় আপিল-প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যবস্থা থাকবে। তবে বিরোধী লেবার দল বলেছে, এই বিলে অভিবাসন বিষয়ে সবচেয়ে জটিল কিছু সমস্যা সমাধানের কথা নেই।
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন বিলে বিদেশি অপরাধীদের প্রথমে যুক্তরাজ্য থেকে বিতাড়িত করার ব্যবস্থা রাখা হবে। পরে তাঁদের আপিল শোনা হবে। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি বড় ধরনের কোনো হুমকি সৃষ্টি করতে পারবেন না।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা কিংবা অন্য কোনো কারণে যাঁরা সাময়িকভাবে অভিবাসী হবেন, তাঁদের সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) কর্মসূচির সেবা পেতে কিছু অর্থ ব্যয় করতে হবে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মার্ক হারপার বলেছেন, যেসব অভিবাসী বিভিন্ন সরকারি সেবা পাওয়ার যোগ্য নন, তাঁরা যাতে তা না পান, সে ব্যবস্থা করা হবে নতুন আইনে। এই আইনে যেসব আকর্ষণের কারণে লোকে যুক্তরাজ্যে যেতে চান, সেসব সুযোগ কমানো হবে। যেসব মানুষকে যুক্তরাজ্যের দরকার নেই, তাঁদের সহজে দেশ থেকে সরানো সম্ভব হবে।
অভিবাসনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা উজ্জ্বলতম ও সেরা অভিবাসীদের এ দেশে স্বাগত জানানো অব্যাহত রাখব। যাঁরা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ও সমাজে অবদান রাখবেন, যাঁরা আইন মেনে চলবেন, অভিবাসন আইন তাঁদের রক্ষা করবে। তবে যাঁরা আইন অমান্য করবেন, আইন তাঁদের পাশে থাকবে না।’
যুক্তরাজ্যে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রায় প্রতি দুই বছর পর পর অভিবাসী আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থায়ী কোনো নীতি গ্রহণ করা হয়নি।
সমালোচকেরা বলছেন, নতুন আইন বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। অনেকে পাসপোর্ট জালিয়াতি করেন। কোনো ভাড়াটের পাসপোর্ট প্রকৃত, নাকি ভুয়া তা নিশ্চিত করতে বাড়ির মালিকদের পাসপোর্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতে হবে। আপিল-প্রক্রিয়ার বিষয়েও আদালতে লড়াই হবে। নিঃসন্দেহে নিম্নমানের ও অন্যায় সিদ্ধান্তের অভিযোগ উঠবে। তবে বিলে যা-ই থাকুক না কেন, অভিবাসী আইন পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্রিটিশ জনগণের আস্থা বেড়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে রাখতে চাইছে। তবে মোটের ওপর অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (ওএনএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে নতুন অভিবাসী এসেছে এক লাখ ৭৬ হাজার। কিন্তু ওই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আগের এক বছরে এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ৫৩ হাজার। বিবিসি।