২০২০ সাল ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে পূর্ব ধারণাগুলো ভেঙে দিয়েছে
বিটকয়েনের ইতিহাসে রেকর্ড দাম
মহামারীতে বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদ অর্থপ্রবাহ বাড়াচ্ছে এবং সুদহার কমিয়ে শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে আসছে। এজন্য বিকল্প স্থিতিশীল সম্পদ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে। আর বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ পেয়ে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বিটকয়েনের দাম। ২০০৯ সালে চালু হওয়ার পর এই প্রথম বিটকয়েনের দাম ২৩ হাজার ডলার ছড়িয়ে গেছে।
স্টক মার্কেটের অস্থিরতায় এ বছর ভার্চুয়াল মুদ্রাটির দাম ১৭০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। বৃহষ্পতিবার ১০ শতাংশ বেড়ে ২৩ হাজার ৫০৫ ডলারে পৌঁছেছে। এমনও প্রত্যাশা রয়েছে, এটি স্টারবাক্স ও মাইক্রোসফটের অর্থ প্রদানের পদ্ধতি হিসেবে আরো ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
২০১৭ সালে একবার রেকর্ড দাম বেড়ে গিয়েছিল এই ডিজিটাল মুদ্রার। ওই বছরের শেষ দিকে বিটকয়েনের দাম ১৯ হাজার ৭৮৩ ডলারে পৌঁছে যায়। কিন্তু কেনাবেচা শুরু হতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। এক বছর পর বিটকয়েনের দাম কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩ ডলার।
পাউন্ড, ডলারসহ বাস্তব মুদ্রার মতো বিটকয়েনেও ব্যাপকভাবে ব্যবসা হয়। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোয় প্রভাবশালী বিনিয়োগকারীরা বিটকয়েনের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন। বিশেষ করে যখন পেপাল ও ভিসার মতো প্রভাবশালী লেনদেন প্রতিষ্ঠান ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ শুরু করেছে তখন অন্যরা তার সম্ভাবনার সুযোগ নিতে চাইছে। যদিও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি অর্থ প্রদানের উপায় হিসেবে বিটকয়েনের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, লোকেরা বিটকয়েনকে অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করছে, সেটি নিয়ে তিনি খুব ঘাবড়ে গেছেন। ভার্চুয়াল এ মুদ্রার মূল্যটি বিনিয়োগকারীদের চূড়ান্তভাবে অনুধাবন করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
বিটকয়েনের দাম এ বছর ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে চালু হওয়ার পর এটির দাম বিভিন্ন সময় বেড়েছে ও কমেছে। পরামর্শক সংস্থা কম্পিটিটিভ কমপ্লায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ইয়ানা আফানাসিভা এটির দামে আগামী মাসগুলোয় আরো উত্থান-পতন হবে বলে প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রকৃতিই এমন যে এখানে কিছু ব্যবসায়ী এটিকে কাজে লাগাতে পারেন। তবে এমন কোনো সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থা নেই, যারা এটির দামে লাগাম টেনে ধরতে পারেন।
ক্রিপ্টোকরেন্সি লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান কয়েনমেট্রোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কেভিন মারকো বলেন, সাধারণত সংকটের সময় মানুষ নগদ অর্থ মজুদ করতে চায়। কিন্তু প্রধান অর্থনীতিগুলো যখন তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করবে, তখন কে নিজের কাছে প্রচুর অর্থ রাখতে চাইবে? কভিড-১৯ মহামারী, মার্কিন নির্বাচন, ব্রেক্সিট ও সর্বোপরি ২০২০ সাল ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে পূর্ব ধারণাগুলো ভেঙে দিয়েছে।