‘প্রচণ্ড ঝুঁকিতে’ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান
ইতিহাসের বৃহৎ সাইবার আক্রমণে টালমাটাল যুক্তরাষ্ট্র
নিজেদের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও জটিল সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে সাইবার ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে দাবি করে থাকে সেই দাবি এবার মারাত্মকভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হল। আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও যে বিদেশি শক্তির কাছ থেকে অত্যন্ত মারাত্মক আঘাতের শিকার হতে পারে তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
সাইবার হামলার এইসব ঘটনায় দেশটির জ্বালানি, অর্থ, বাণিজ্যসহ একাধিক সরকারি সংস্থার কম্পিউটার নেটওয়ার্ক আক্রান্ত হয়েছে। হ্যাকিংয়ের প্রমাণ পাওয়ায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ‘প্রচণ্ড ঝুঁকিতে’ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ আক্রমণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সবচেয়ে বেশি ভাবতে হচ্ছে, কারণ দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ নিয়ে তথ্য চুরির বড় ধরনের আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র খাতটি জ্বালানি বিভাগের অধীনে। যদিও দাবি করা হচ্ছে, পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েনি।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটও জানিয়েছে, তাদের অন্তত ৪০টি গ্রাহক সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক; বাকিরা কানাডা, মেক্সিকো, বেলজিয়াম, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও আরব আমিরাতভিত্তিক। মাইক্রোসফটের গ্রাহকের মধ্যে রয়েছে সরকারি সংস্থা, থিংক ট্যাংক, বেসরকারি সংস্থা ও আইটি কোম্পানি।
মাইক্রোসফট প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ মনে করেন, পরিসর, জটিলতা আর প্রভাবের বিচারে এ সাইবার আক্রমণ আসলে অনেক বড় ঘটনা। নিজের ব্লগে তিনি লিখেছেন, এমনকি এ ডিজিটাল যুগেও এটি সচরাচর গুপ্তচরবৃত্তির নয়। অধিকন্তু এটি একটি উন্মত্ততা, যা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে গুরুতর এক প্রযুক্তিগত দৈন্য ফুটিয়ে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাইবার এজেন্সি, দ্য সাইবারসিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার এজেন্সি (সিআইএসএ) কিংবা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) কেউই প্রকাশ্যে হামলাকারীর নাম বলেনি, যদিও বেসরকারি সিকিউরিটিজ কোম্পানি ও সরকারি কর্মকর্তারা কেউ কেউ এ হামলার পেছনে রাশিয়াকেই দায়ী করছেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে অবশ্য এ হামলার দায় সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।