করোনাভাইরাস রোগী বৃদ্ধি: ব্রিটেনের হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস এর হাসপাতালগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে শয্যা সংকটে পড়েছে। করোনাভাইরাসের রোগীদের অস্বাভাবিক সংখ্যা বৃদ্ধির দরুণ এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে এনএইচএস। এ অবস্থায় হাসপাতালগুলোর অপারেশন কার্যক্রমও বাতিল করা হয়েছে। তাদের পরিসংখ্যান অনুসারে, হাসপাতালসমূহ তাদের অ্যাম্বুলেন্স ক্রুদের অন্য রোগীর পরিবর্তে কোভিড রোগীদের আনার নির্দেশনা প্রদানে বাধ্য হচ্ছে এবং বিষয়টি গত সপ্তাহে ৪৪গুণ বৃদ্ধি পায়। এটা গত ৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
লন্ডন, লেইসেস্টার ও নরদাম্পটনের হাসপাতালগুলোর অবস্থা বেশী শোচনীয়। এনএইচএস প্রোভাইডারস্ এর প্রধান নির্বাহী ক্রিস হপসন এই মর্মে সতর্কবানী উচ্চারণ করেন যে, আমরা ইতোমধ্যে অনুভব করতে শুরু করেছি যে, আমরা একটি খারাপ শীতকালের কবলে পড়েছি এবং আমাদের অনেকদূর যেতে হবে। অনেক এনএইচএস স্টাফ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত রয়েছেন। এটা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে। আগামী সপ্তাহগুলোতে এই ফ্রন্টলাইন সার্ভিসে এ ধরনের চাপ আরো বৃদ্ধি পাবার আশংকা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে একদিনে রেকর্ডসংখ্যক ৩৫৩৮৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। মোট রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১৮ হাজারেরও বেশী। গত সপ্তাহের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩ হাজার বেশী।
ইংল্যান্ডের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, হাসপাতালে ১৫৪৬৫ জন কোভিড রোগী রয়েছেন, যা সেপ্টেম্বরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউকালীন যেকোন সময়ের চেয়ে বেশী। গত মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন হসপিটাল একটি ‘ইন্টারনেল ইনসিডেন্ট’ ঘোষনা করতে বাধ্য হয়। শয্যার জন্য অপেক্ষমাণ রোগীদের স্থান দিতে ডিসচার্জ করা যায় এমন ভর্তিকৃত রোগীদের শনাক্ত করার জন্য সিনিয়র চিকিৎসকদের বলা হয়।
নর্দাম্পটন জেনারেল হসপিটাল বেশ কিছু নির্ধারিত অপারেশন বাতিল করেছে গুরুত্বর অসুস্থ কভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট সেইজ কমিটির সদস্য এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন-এর ক্লিনিক্যাল অপরাশেনাল রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক ক্রিস্টিনা প্যাগেল বলেছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে এপ্রিলের চেয়েও বেশী রোগী ভর্তি হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, মৃত্যুর মিছিল আরো বড়ো হচ্ছে। আর এটা ক্রিসমাসের অবকাশের আগেই হবে।