ইউরোপে খাদ্যসঙ্কটে ৪ কোটির বেশি মানুষ
ইউরোপজুড়ে খাদ্য ঘাটতির মুখে রয়েছে কমপক্ষে ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। আর ১২ কোটি মানুষ আছে দারিদ্রের ঝুঁকিতে। নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রস। ইউরোপের কোটি মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং খাদ্য ঘাটতির করুণ চিত্র তুলে ধরে বৃহস্পতিবার জেনেভায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস’ এবং ‘রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ’(আইএফআরসি)এর মহাসচিব বেকেলে জেলেটা।
এতে বলা হয়, ইউরোপ বিপর্যয়কর অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধঃপতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট জর্জরিত ইউরোপের দেশগুলোতে সরকারের নানা কৃচ্ছ্র পদক্ষেপের কারণে দারিদ্র এবং বেকারত্ব বাড়ছে।
ইউরোপের এ অবস্থাকে গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বেলজিয়াম, জর্জিয়া, গ্রিস, ইতালি, সুইডেনসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে গবেষণা চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে রেডক্রস। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ টি দেশসহ বলকান অঞ্চলের ১৪ টি দেশ, পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে গবেষণার ভিত্তিতেও পরিসংখ্যান দিয়েছে তারা।
৬৮ পাতার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইউরোপে এখন ৩৫ লাখ মানুষকে খাদ্য সাহায্য দেয়া হচ্ছে। ৩ বছর আগের তুলনায় খাদ্য সাহায্যের এ হার ৭৫ শতাংশ বেশি।
আর দারিদ্রের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র লাটভিয়ার মতো দেশগুলোই নয় বরং ফ্রান্সের মতো ধনী ইউরোপীয় দেশগুলোতেও মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
ফ্রান্সের ৩৫০,০০০’রও বেশি মানুষ ২০০৯ সাল থেকে দারিদ্রের কবলে পড়েছে। একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে অন্য আরো বহু ইউরোপীয় দেশে। অবনতিশীল এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয়দের মধ্যে বিষন্নতা, ক্ষোভ এবং হতাশা দেখা দিচ্ছে।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে ইউরোপজুড়ে ৫ ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গরিবরা আরো গরিব হচ্ছে। যারা গরিব হতে শুরু করছে তারা দিন দিনই তলিয়ে যাচ্ছে দারিদ্রের অতল গহ্বরে। স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। বেকারত্ব বাড়ছে এবং মানুষ অভিবাসনের দিকে ঝুঁকছে।
ইউরোপে অর্থনৈতিক সঙ্কটের শুরু ২০০৮ সালের গোঁড়ার দিকে। অর্থনৈতিক অচলাবস্থার কারণে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে চরম ঋণ সঙ্কট জর্জরিত গ্রিস, পর্তুগাল, ইতালি, আয়ারল্যান্ড এবং স্পেন।
ঋণ সঙ্কট সামাল দিতে ইইউ দেশগুলোর সরকার কঠোর ব্যয়সঙ্কেচন নীতি নেয়ায় ইউরোপের বহু দেশেই এখন চলছে ব্যাপক বিক্ষোভ।