বড়দিন উপলক্ষে দরিদ্রদের সাহায্যের আহ্বান পোপের

আজ শুভ বড়দিন

বৈশ্বিক মহামারি কভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতির কারণে এবার অনেকটাই সীমিত পরিসরে উদযাপিত হচ্ছে শুভ বড়দিন। ব্রিটেনসহ সারাবিশ্বে ‘জৌলুসহীন’ এক উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার বাইরে আনুষঙ্গিক আয়োজনও অনেকটা সংক্ষিপ্ত করে আনা হয়েছে। আজ সারাবিশ্বে উদযাপিত হবে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীরা ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন। করোনার কারণে সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ উৎসব উদযাপিত হবে।

খ্রিস্টান‌দের বিশ্বাস ম‌তে,  ২৫ ডিসেম্বরের এই দিনে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নেন। বর্তমান ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে মা মেরির গর্ভে জন্ম নেন তিনি। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, তিনি ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করতে এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের লক্ষ্যে প্রভু যিশুর এ পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।
এক ভাষণে পোপ ফ্রান্সিস বিশ্ববাসীকে নিজেদের দায়িত্ব মনে করে গরীবদের সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড়দিনের বার্তায় পোপ বলেন, ‘‘ঈশ্বরের পুত্র নিজেও দরিদ্র এবং সমাজচ্যুত মানুষদের মধ্যে জন্ম নিয়েছেন। তার মধ্য দিয়ে তিনি বলতে চেয়েছেন, সমাজচ্যুতরাও ঈশ্বরেরই সন্তান। ‘‘দারিদ্র এবং প্রয়োজনের মধ্য দিয়েই ঈশ্বর আমাদের মাঝে আসেন এবং বলেন, গরীবদের সেবা করার মাধ্যমেই আমরা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে পারবো।”
যারা সম্পদ গড়ার নেশায় উন্মত্ত, বিশেষ করে তাদেরকে সাধারণ জীবনে ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন, নিজেদের জিজ্ঞেস করি: জীবনযাপনের জন্য সত্যিই কি আমার এতকিছুর প্রয়োজন আছে? অপ্রয়োজনীয়, অতিরিক্ত জিনিস ছাড়া কি আমি চলতে পারি না? অতি সাধারণ জীবনযাপন করতে পারি না?” বড়দিন শুরুর সময়টিতে ঐতিহ্য অনুযায়ী ভ্যাটিকানে সেন্ট পিটারস বাসিলিকায় বক্তব্য দেওয়ার সময় কথাগুলো বলেন পোপ ফ্রান্সিস। এসময় প্রায় ১০ হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
করোনার মধ্যে বিধিনিষেধ মেনেই বিভিন্ন গির্জায় বড়দিনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। তবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ম মেনেই আয়োজিত হবে। প্রার্থনাও চলবে যথারীতি। আর এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গির্জার ভেতরে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জায় প্রতীকী গোশালা বসানো হয়েছে। বেথলেহেমের গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুখ্রিষ্টের জন্মের কথা স্মরণ করে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতেই এই গোশালা বসান খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী ও জাঁকজমকপূর্ণ এ সাজসজ্জায় রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। বিশেষ প্রার্থনা এবং খাবারের আয়োজনের প্রস্তুতিও শেষ করে আনা হয়েছে। বেশিরভাগ গির্জায় থাকছে সীমিত আলোকসজ্জা। গির্জার বাইরে আনন্দ-উৎসব ও আলোকসজ্জা থাকছে না বললেই চলে। থাকছে না বড়দিন উপলক্ষে মেলার আয়োজন।
আয়োজকরা জানান, গির্জার প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। প্রার্থনা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব মেনে ভক্তদের অংশ নিতে দেওয়া হবে। খ্রিষ্টানদের ঘরে ঘরেও চলছে সীমিত উৎসব উদযাপনের অনুরূপ প্রস্তুতি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button