হাসপাতালের বাইরে তাবু স্থাপনের পরিকল্পনা
করোনার নতুন সংক্রমণে বিপর্যস্ত ব্রিটেন
২৪ ঘন্টায় রেকর্ড সংখ্যক ৯৮১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৫০,০২৩ জন
এনএইচএস হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় শীঘ্রই একটি মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় কভিড-১৯ রোগীদের পক্ষে জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা লাভ আদৌ সম্ভব হবে কি-না, এ ব্যাপারে শংকা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যব্যাপী আরেকটি নতুন লকডাউনের সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় এ শংকা সৃষ্টি হয়েছে। গত এপ্রিল মাসের পর আজ বুধবার সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু বরণ করেছেন ৯৮১ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৫০,০২৩জন।
এএইচএস- এর কনসালট্যান্ট এনেসথেসিস্ট এবং হাসপাতাল কনসালট্যান্ট এ্ন্ড স্পেশালিষ্টস অ্যাসোসিয়েশন (এইচসিএসএ)- এর প্রেসিডেন্ট ডাঃ ক্লডিয়া পাওলোনি বলেন, এনএইচএস-এর ৭২ বছরের ইতিহাসে কখনো এতো মারাত্মক জরুরী অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি। অনেক হাসপাতাল রোগীদের স্থান দিতে বাইরে তাবু স্থাপনের বিষয় বিবেচনা করছে। এএন্ডই বিভাগগুলোর বাইরে অ্যাম্বুলেন্সের লম্বা সারি দেখা যাচ্ছে। ভর্তি হতে রোগীদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে এভাবে।
গত মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলের রয়াল লন্ডন হসপিটাল, র্যামফোর্ডের কুইন্স হসপিটাল এবং বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হসপিটালে এ ধরনের এম্বুলেন্সের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-এর কনসালট্যান্ট কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং এএন্ডই কনসালট্যান্ট ডাঃ সাইমন ওয়ালশ হাসপাতালের বাইরে তাবুর পরিকল্পনা প্রকাশ করে বলেন যে, একটি সন্ত্রাসী হামলা কিংবা শিল্প বিপর্যয়ের মতো একটি বড়ো ধরনের ঘটনার পর সাধারনত: এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। তিনি আরো বলেন, কভিড আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে আগামী কয়েক সপ্তাহ রোগী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এ অবস্থায় এনএইচএস স্টাফরা অবনতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ওয়ালশ সেবা ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান গোলমেলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় একটি পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। ডক্টরসেজ অ্যাসোসিয়েশন ইউকে বলেছে, কভিড মহামারি সাম্প্রতিক সময়ে এনএইচএস-কে অত্যন্ত চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দক্ষিন-পূর্ব অঞ্চলে এনএইচএস নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। দক্ষিন-পূর্বের হাসপাতালগুলোর আইসিইউগুলোতে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের হাসপাতালগুলোতে নন-ইনভ্যাসিভ ভেন্টিলেটর ফুরিয়ে আসছে, এমনকি অক্সিজেনের মতো মৌলিক জিনিসও শেষ হতে চলেছে।
নটিংহ্যামশায়ারের শেরউড ফরেস্ট গ্রুপ এর প্রধান নির্বাহী রিচার্ড মিচেল টুইট বার্তায় বলেন, আজ কঠিন, আগামী কাল কঠিনতর এবং পরবর্তী সপ্তাহগুলো হবে এনএইচএস এর ইতিহাসে সম্ভবত: ব্যস্ততম এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। অবশ্য ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ এন্ড সোশ্যাল কেয়ার বলেছে, ভেন্টিলেটরের কোন ঘাটতি নেই এবং চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। এই বৈশ্বিক মহামারিব্যাপী এনএইচএস-এর সুরক্ষা ও জীবন রক্ষার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা আমরা করেছি। যে কেউ প্রয়োজনে যাতে একটি ভেন্টিলেটর পায়, এটা নিশ্চিত করেছি আমরা।