স্কুল বন্ধ ঘোষণা
ফের জরুরি কোভিড হাসপাতালগুলো চালু করল যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে গত চার দিনে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি করে নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে করোনাজনিত মহামারি শুরুর সময়ে তৈরি করা জরুরি হাসপাতালগুলো পুনরায় চালু করেছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া লন্ডনে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কয়েকদিন আগে রয়্যাল লন্ডন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের ইমেইলে জানিয়েছিল, হাসপাতালে এখন উচ্চমানের নিবিড় পরিচর্যা সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরিবর্তে হাসপাতালটিতে দুর্যোগকালীন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। করোনার নতুন ধরনটি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি সংক্রামক হতে পারে। আর এই নতুন করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে একটি হলো লন্ডন। কয়েকদিন আগেই লন্ডনে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত বদলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে লন্ডন কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ শিক্ষামন্ত্রী গ্যাভিন উইলিয়ামসন বলেন, ‘শিশুদের শিক্ষা ও সুস্থতাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।’
করোনায় অনেকে দেশের মতো যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৭৪ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে করোনার নতুন ধরনটির সংক্রমণ। বর্তমানে যুক্তরাজ্য করোনায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ হাজারের বেশি নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, আর মারা গেছে ৬১৩ জন।
করোনাকালে নানা কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার। এর মধ্যে গত বছরের মার্চে লকডাউন দিতে দেরি করায় ব্রিটিশ সরকারের তুমুল সমালোচনা হয়। এ ছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছাড়া গ্রেড দেওয়ার ব্যবস্থার অনুমোদন না দেওয়ার কারণেও তোপের মুখে পড়তে হয় বরিস জনসনের সরকারকে।
স্কাই নিউজের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নববর্ষের প্রাক্কালে গত ৩১ ডিসেম্বর লন্ডনের তিনটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে কোনো শয্যা খালি ছিল না।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে মহামারির শুরুর দিকে সেনাবাহিনীর নির্মিত অস্থায়ী হাসপাতালগুলো পুনরায় চালু করা হচ্ছে।
তবে অস্থায়ী হাসপাতাল পুনরায় চালু করলেও সেসব হাসপাতালে পর্যাপ্ত সেবিকা পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। রয়্যাল কলেজ অব নার্সিং এরই মধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছে, নতুন হাসপাতালগুলোতে সেবা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সেবিকা যুক্তরাজ্যে নেই। সেবিকাদের অনেকে নিজেরাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন কিংবা আইসোলেশনে রয়েছেন।