এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স এর আগে কোনো বছরে আসেনি
২০২০ সালে রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড ২১৭৪ কোটি ডলার
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও ২০২০ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ১৭৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স এর আগে কোনো বছরে আসেনি। গত বছর রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৪১ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর অর্থবছর বিবেচনায় চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলো শাখা ছাড়াও এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে কম সময়ে সুবিধাভোগীর দোরগোড়ায় রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছে দিচ্ছে। এ ছাড়া বৈধ পথে রেমিট্যান্সের ওপর সরকারের ২ শতাংশ নগদ সহায়তা অব্যাহত আছে। আবার বিমান চলাচল একেবারে সীমিত হয়ে যাওয়ায় সঙ্গে করে বৈদেশিক মুদ্রা আনার প্রবণতা কমেছে।
এসব কারণে হুন্ডি পথে আগে যেসব প্রবাসী আয় আসত, তার বড় অংশই এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে আসছে। আবার বিশ্বের অন্য সব দেশের খারাপ অবস্থার কারণে বিনিয়োগের তেমন পরিবেশ নেই। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ছে। যদিও করোনার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসীদের অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। নতুন করে শ্রমিক নিচ্ছে না অধিকাংশ দেশ। গত কয়েক মাসে অনেকে দেশে ফিরেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে শুধু আগস্ট ছাড়া সব মাসে দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ২৯৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশে করোনার প্রভাব শুরুর পর মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে রেমিট্যান্স কমে যায়। যে কারণে প্রথম ছয় মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল মাত্র ৮৮০ কোটি ডলার। প্রথম ছয় মাসের তুলনায় শেষ ছয় মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪১৫ কোটি ডলার বা ৪৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৩৫৪ কোটি ডলার বা ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে গত মার্চের পর থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার যোগ হয়ে ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত ডিসেম্বরে প্রবাসীরা ২০৫ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার। এতে করে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৬ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২২ শতাংশ।