‘তথ্য ফাঁস ব্রিটিশ গোয়েন্দা ইতিহাসে বড় বিপর্যয়’
এডওয়ার্ড স্নোডেনের ব্রিটিশ গোপন নজরদারি ফাঁস করে দেওয়াকে দেশটির ‘গোয়েন্দা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্যার ডেভিড ওমান্ড। তাঁর মতে, ফাঁস হওয়া নথি রাশিয়া ও চীন হাতে পেয়ে বিশ্লেষণ করছে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের গোপন নজরদারির বিষয়টি ফাঁস করেন।
এদিকে ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ ব্রিটিশ নজরদারির বিষয়টি আইনের আওতায় রেখে কীভাবে আরও জবাবদিহিমূলক করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন।
ব্রিটিশ নজরদারির কেন্দ্র জিসিএইচকিউ-এর সাবেক প্রধান ডেভিড ওমান্ড বলেন, ‘৫৮ হাজার ব্রিটিশ নিরাপত্তাবিষয়ক নথি চুরি হয়েছে। এটা সাংঘাতিক ক্ষতিকর। বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব নথিতে থাকা তথ্য মস্কো ও বেইজিং হাতে পেয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ গোয়েন্দা ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। পঞ্চাশের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে বার্গেস ও ম্যাকলিনের তথ্য তুলে দেওয়ার চেয়েও বিপর্যয়কর।’
ডোনাল্ড ডুয়ার্ট ম্যাকলিন, গাই বার্গেসসহ কয়েকজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে ব্রিটিশ গোয়েন্দা তথ্য পাচার করেন।
ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ভিন্স ক্যাবল বিবিসি বেতার ৪-এ বলেন, ‘আমি মনে করি, স্নোডেনের তথ্য ফাঁসকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো ইতিবাচকভাবে চাঞ্চল্যকর। অপরটি সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। কারণ, সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ফাঁস করেছেন তিনি।’ স্নোডেনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তা প্রকাশ করে গার্ডিয়ান ‘সঠিক কাজই করেছে’ বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী ক্লেগ এ বিষয়ে বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন। নজরদারি প্রকল্পে নতুন প্রযুক্তি যোগ করে আইনের আওতায় থেকে কীভাবে সরকারের জবাবদিহি ও জনগণের আস্থা নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। ক্লেগের এই আলোচনার উদ্যোগের মাধ্যমে তথ্য ফাঁসের ফলে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উদ্বেগ থাকার কথা এই প্রথম পরোক্ষভাবে হলেও স্বীকার করা হলো। সরকার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জবাবদিহির বিষয়টি নিয়ে চাপে আছে।
এর আগে নিক ক্লেগ বলেন, ব্রিটিশ গোয়েন্দা কার্যক্রম নিয়েগার্ডিয়ান-এ স্নোডেনের বরাত দিয়ে যে নথি প্রকাশ করা হয়েছে, তা ক্ষতিকর। তাঁর আগে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভ-এর প্রধান অ্যান্ড্রু পার্কারও একই ধরনের মন্তব্য করেন।