যুক্তরাজ্যের কেয়ার হোমগুলো বিপর্যস্ত
সাসেক্স’র কেয়ার হোমের অর্ধেক বাসিন্দা করোনায় মারা গেছেন
অধিক সংক্রমণশীল করোনাভাইরাসের আক্রমনে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকা এখন রীতিমতো বিপর্যস্ত। ইংল্যান্ডের বিপর্যন্ত সাউথ-ইস্ট অঞ্চলের ইষ্ট সাসেক্স-এর একটি কেয়ার হোমের অর্ধেক বাসিন্দা করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন। ক্রিসমাসের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় আতংক সৃষ্টি হয়েছে। ক্রোহার্স্টের বর্ণিত ইডেনডেইল লজ কেয়ার হোমের ২৭ জন বাসিন্দার মধ্যে ১৩ জন গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। হোম অপারেটরদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাডাম হাচিসন এ তথ্য জানিয়েছেন। হাচিসন কেন্ট-এ কেয়ার হোমও পরিচালনা করেন।
এছাড়া কেয়ারহোমগুলোর এক তৃতীয়াংশেরও বেশী স্টাফের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ক্রিসমাসের প্রারম্ভ ও বক্সিং ডে’র মধ্যবর্তী সময়ে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চলতি সপ্তাহের সোমবারে ঘটেছে সর্বশেষ মৃত্যুর ঘটনা।
হাচিসন বলেন, এটা অপ্রতিরোধ্য। আমরা নীরব দর্শকের ন্যায়। প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে বসন্তে সংক্রমণের হার হ্রাস পেলেও কয়েক মাস পর কেয়ার হোমগুলোতে করোনার আক্রমণ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এসেক্স কাউন্টি কাউন্সিল সংক্রমণ এড়াতে তার এলাকায় সকল কেয়ার হোমে দেখা সাক্ষাত বন্ধ ঘোষনা করেছে।
অনেক কেয়ার হোম হতাশ যে, এর বাসিন্দাদের এখনো ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত বুধবার পার্লামেন্টে বলেন, তিনি চান ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচী ত্বরান্বিত করা হোক। কেয়ার হোমের ১০ শতাংশ বাসিন্দা এবং ১৪ শতাংশ স্টাফ ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
হাচিনসনের কোম্পানী বেলমন্ট হেলথকেয়ার ৪টি কেয়ারহোম পরিচালনা করে। তারা তাদের স্টাফদের অন্যত্র চাকুরী চাকুরী খুঁজতে বলেছে। গত ডিসেম্বরে ইংল্যান্ড জুড়ে কেয়ার হোমে মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি পায়। দেশে কভিডে মৃত্যুর হারের চেয়ে কিছুটা অধিক দ্রুত গতিতে এগুলোতে সংক্রমণ ঘটে। সরকারী পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওএনএস জানায় ডিসেম্বরের শুরুতে ইংল্যান্ডের কেয়ার হোমসমূহে এক সপ্তাহে ৪৪০জন মারা যায়। ক্রিসমাসের আগের সপ্তাহে তা ৫৮৮-তে উন্নীত হয়। এ সংখ্যা সেপ্টেম্বরেরের প্রথম সপ্তাহের চেয়ে কিছু বেশী, যখন কভিডে ৪২ ব্যক্তি মারা যায়। এপ্রিলে মহামারির প্রথম চূড়ান্ত অবস্থায় কেয়ার হোমের ২৭০০ বাসিন্দার একটি ক্ষুদ্রাংশ মারা যান, যখন শনাক্তকরণের হার ছিলো অনেক কম। হাচিসন আরো বলেন যে, নতুন মহামারির ফলে মৃত্যু শংকার প্রেক্ষাপটে কেয়ার হোমগুলো হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে। এ অবস্থায় অপরিচালনযোগ্য কেয়ার হোমগুলোর বাসিন্দারা যাবে কোথায়, এমন প্রশ্নও এখন বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছে। এসব বাসিন্দা এনএইচএস-এর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে-এমন আশংকা সংশ্লিষ্ট মহলের।