বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ
মহামারির সময় আর্থিক টানাপোড়েনে থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও হতাশা দূরীকরণের লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার অতিরিক্ত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করেছে ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। ইতোপূর্বে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শেষে নতুন ফান্ডিং হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী হলের জন্য অর্থ পরিশোধ করলেও লকডাউনের সময় বাড়ি থেকে অনলাইনে ক্লাস করার জন্য শিক্ষার্থীদের বলায় তারা ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু করে। এরপরই ডিসেম্বরে ২০ মিলিয়ন পাউন্ডের সরকারী ফান্ডিং প্যাকেজ আসে, যার লক্ষ্য সেইসব শিক্ষার্থীকে সহায়তা, যারা বিকল্প বাসস্থান ও দূরশিক্ষণের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় করতে হিমশিম খাচ্ছে। এই নতুন ফান্ডিংকে শিক্ষা খাত স্বাগত জানালেও ভাইস-চ্যান্সেলর, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ এবং শিক্ষার্থীরা বলছেন এটা পর্যাপ্ত নয়। তারা ট্যুইশন ফী ফেরত দেয়ার জন্য বলছেন।
এছাড়া অনলাইন বিশ্ববিদ্যালয় অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তারা। এ অবস্থায় এমপি’রা ইংল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের জন্য কভিড ডিসরাপশন অর্থাৎ মহামারি জনিত ব্যাঘাতের জন্য ফান্ড দ্বিগুণ করার আহবান জানিয়েছেন। ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টস-এর প্রেসিডেন্ট ল্যারিসা কেনেডি বলেন, বর্তমানে মহামারির কারণে অনেক শিক্ষার্থী চরম আর্থিক চাপের মধ্যে আছেন। তারা ভাড়া ও বিল পরিশোধে পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। তাদেরকে ফুড ব্যাংকের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। এই ইস্যুর ব্যাপকতা মোকাবেলায় এই অর্থ যথেষ্ট নয়।
ইউনিভার্সিটি এন্ড কলেজ ইউনিয়ন- এর জেনারেল সেক্রেটারি ডাঃ জো গ্যাডি বলেন, এই ক্ষুদ্র পরিমান ফান্ডিং প্যাকেজ মেরামত কাজে প্লাস্টার মাত্র। এই খাত যে ব্যাপক সমস্যা মোকাবেলা করছে এটা তার সমাধান নয়। অবশ্য অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ও বাসস্থান প্রদানকারী ইতোমধ্যে বলেছেন যে, তারা ঐসব শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে চার্জ নেবেন না, যারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ব্যবহার করতে পারছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘ইউনিভার্সিটিজ ইউকে’ বলেছে, অতিরিক্ত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড একটি নেতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু তারা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা ও ক্যাচ-আপ প্রোগ্রামের জন্য আরো অর্থ বরাদ্দের আহবান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ৭ জন ভাইস-চ্যান্সেলর শিক্ষার্থীদের টুইশন ফী পরিশোধে ১৫ মাসের সুদমুক্ত মওকুফ বা ছাড় প্রদানের জন্য সরকারকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। তারা চিঠিতে সংক্ষিপ্ত সময়ের যোগ্যতার জন্য স্কিল ফান্ডিং লভ্য করার আহ্বান জানিয়ে সুপারিশ করেছেন, যা বেকার গ্র্যাজুয়েটের চাকুরীর সম্ভাবনার উন্নয়ন ঘটাবে।
রয়াল হলোওয়ে ও মাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মহামারি আমাদের শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব চাপের মধ্যে ফেলেছে। আমাদের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্ভোগের জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিমান শতভাগ বৃদ্ধির দাবি ওঠেছে। মহামারির দরুণ শিক্ষার্থীরা বিশেষ মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করছে এবং ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর একটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা ট্যাবলেট নেই। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সরকারী সহায়তা একটি জরুরী অগ্রাধিকার।
ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটিজ মিনিস্টার মিচেল ডানলেন বলেন, যে অতিরিক্ত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের কথা আজ আমরা ঘোষনা করছি, এর মানে হচ্ছে কেবল চলতি অর্থবছরে আমরা দুর্ভোগ পীড়িতদের জন্য ৭০ মিলিয়ন পাউন্ড বিতরণ করেছি। এক্ষেত্রে ২৫৬ মিলিয়ন পাউন্ড সরকারী অর্থায়নকৃত শিক্ষার্থী প্রিমিয়ামের মধ্যে এটা শীর্ষে- যে অর্থ চলতি একাডেমিক বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যবহার করতে পারবে।