উলামাদের সম্মানহানির পরিণাম সরকারের জন্য শুভ হবে না : মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ
খেলাফত আন্দোলন প্রধান ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, উলামা ও পীর-মাশায়েখগণ এদেশে ধর্মপ্রাণ মানুষের নয়নমনী, সেরেতাজ, সকলের আস্থা ও শ্রদ্ধাভাজন ও ধর্মীয় মুরুব্বি। উলামায়ে কেরামের সহচার্যে এসে অনেক পথহারা-বিপথগামী মানুষ সঠিক পথের দিশা পেয়ে আদর্শ মানুষে পরিণত হয়েছে। সামাজিক ও ধর্মীয় প্রায় সকল কাজে আলেম-উলামা ও ইমাম-খতীবদের অবদান অপরিসীম। সমাজ বিনির্মাণে আলেম সমাজের এই ভূমিকাকে কেউ খাটো করে দেখালে তা হবে তার হীন মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। ইদানীং একটি কুচক্রি মহল আলেম-উলামাদের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম-সুখ্যাতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ করে আলেমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচার চালাচ্ছে। নিজেরা পবিত্র কুরআনকে পুড়িয়ে কুরআন প্রেমিক আলেমদের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে। যে কওমী মাদরাসায় কখনো গুলীর একটি খোসাও পাওয়া যায়নি সেখানে গ্রেনেড নাটকের কল্পকাহিনী সাজিয়ে কওমী মাদরাসাকে জঙ্গিবাদের আস্তানা প্রমাণ করে ইসলামের দুশমনদের মনোরঞ্জনে সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। মিথ্যা বানোয়াট ও অসংখ্য মামলা দিয়ে আলেমদের হয়রানি করা হচ্ছে। উলামাদের সম্মানহানির পরিণাম সরকারের জন্য শুভ হবে না।
তিনি বলেন, আলেমদের বিরুদ্ধে সরকারের মিথ্যাচার জনগণ বিশ্বাস করে না। বার বার মিথ্যাচারের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা দিন দিন তলানির নীচে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করার কারণে আলেম-উলামা ও বিভিন্ন মাদরাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সরকারের এ ষড়যন্ত্র জনগণ ব্যর্থ করে দিবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকে খেলাফত আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম লালখান বাজার মাদরাসা অবিলম্বে খুলে দেয়া এবং মুফতী হারুন ইজহারসহ গ্রেফতারকৃত ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নিছক একটি দুর্ঘটনাকে মিডিয়া ক্যু’র মাধ্যমে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোনো অবস্থাতেই বরদাশত করবে না। অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা এবং বন্ধ করে দেয়া লালখান বাজার মাদরাসা খুলে দেয়া না হলে গোটা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ফুঁসে উঠবে। সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে কওমী মাদরাসাগুলো ব্যাপক ও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। তখন নাস্তিক-মুরতাদ, ইসলামবিদ্বেষী, মাদরাসা শিক্ষাবিরোধীচক্র গ্রাম-গঞ্জ সর্বত্র গণপ্রতিরোধের মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে গ্রেনেড ও বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধারের কথা বলা হলেও চিকিৎসকরা বলেছেন, নিহত ও আহত ছাত্রদের শরীরে কোন প্রকার বিস্ফোরকের আলামত পাওয়া যায়নি। বরং আগুনের তাপেই শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে অপরাধ দমন বিভাগ সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের এক সহকারী পুলিশ সুপার জানান, ‘সেখানে মানুষের শরীরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমাদের চোখে পড়েনি।’ ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বশীলগণও সেখানে কোনোরূপ বারুদের গন্ধ পাননি বলে মন্তব্য করেছেন। সেখানে সন্ধ্যার পরে গ্রেনেড আসল কিভাবে? আবার ঘটনার আধা ঘণ্টার মধ্যে এলাকার চিহ্নিত দলীয় সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে মাদরাসার বিরুদ্ধে লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে মিছিল কীভাবে হতে পারলো? অগ্নিকান্ডে এতো কিছু পুড়ে গেলেও তথাকথিত গ্রেনেড কীভাবে অবিস্ফোরিত ও তাজা রয়ে গেল এটি বড় রহস্যজনক।