কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচ লাখ মানুষ
যুক্তরাষ্ট্রের সব যুদ্ধকে হার মানালো করোনা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যুর ভয়াবহতা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ‘দাবানলের’ মতো ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি মুহূর্তে দেশটিতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বাঁচা-মরার এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এক নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। আজ সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচ লাখ মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, এ সংখ্যা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিহত মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর সংখ্যার চেয়েও অধিক।
নিউইয়র্ক টাইমস এ খবর দিয়ে মার্কিন জাতীয় পতাকার পাশে একটি শোকার্ত পরিবারের ছবি ছাপিয়ে জানিয়েছে, রণাঙ্গনের চেয়ে অধিক মৃত্যু চলমান করোনা পেন্ডেমিক পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা বিশ্বের জন্য একটি ভয়াবহ রেকর্ড। বিশ্বের আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুর সংখ্যা সারা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে এবং অতীতেও কোনো দেশ মহামারির কারণে এতো মানুষের মৃত্যু দেখেনি, যা দেখা গেলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
নিউইয়র্ক টাইমস সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) প্রত্যুষে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্ত করে ৪৯৮,০৩৩ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২২ ফেব্রুয়ারির কোন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ স্পর্শ করবে। মোটামুটি এক বছরের মহামারিতে এই সংখ্যাটি পাওয়া গেছে। পরিসংখ্যান মতে, প্রতি ৬৭০ জন মার্কিনীর মধ্যে একজন প্রাণ হারাচ্ছেন করোনায়।
ক্রমবর্ধমান করোনার বিস্তারের ফলে পুরো যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে হন্তারক মহামারি। রক্ষা পাচ্ছে না জনবহুল বড় শহর এবং জনবিরল গ্রামাঞ্চলও। মৃত্যুর ভয়ঙ্কর মিছিলে আরো ভীতির সঞ্চার করেছে করোনার নতুন ধরন, যার একাধিক নমুনা শনাক্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের নতুন ধরনগুলো অনেক বেশি আক্রমণাত্মক এবং দ্রুত বিস্তারশীল। নবউদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ভাইরাসের নতুন ধরনকে প্রশমন করতে কতটুকু সক্ষম হবে, এ বিষয়েও বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন।
‘মৃত্যুর এই বর্ধিষ্ণু সংখ্যা এমন সময় জানা গেলো, যখন আশা করা হচ্ছিল যে, শীতের শেষে করোনার প্রকোপ কমবে এবং টীকাকরণও চলছিল পুরোদমে’, রন ক্রো, যিনি পরিবারের একাধিক সদস্যকে হারিয়েছেন করোনায়, বলেন কথাগুলো। ‘আমরা এখনো বিহ্বল ও শঙ্কিত’, জানান তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি আবারো নাজুক হতে চলেছে বলে মনে করা হলেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন চলতি বছরের শেষ নাগাদ সব কিছু স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেছেন। অন্যদিকে, দেশটির প্রধান রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি পরিস্কার বলে দিয়েছেন যে, ‘২০২২ সাল পর্যন্ত মাস্ক পরিধান, সামাজিক সতর্কতা ও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন অব্যাহত রাখতে হবে।’