হেফাজতের নায়েবে আমির গুলিবিদ্ধ
হেফাজতে ইসলামের ডাকে দেশব্যাপী হরতাল পালিত, দু’দিনে নিহত ১৭ জন
সোমবার সারাদেশে দোয়া কর্মসূচি ২ এপ্রিল ফের বিক্ষোভ
ব্যাপক সংঘর্ষ ও মিছিল-পিকেটিংয়ের মধ্য দিয়ে হেফাজতে ইসলামের ডাকে রোববার দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়েছে। রোববার বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হরতাল সফল করায় নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, হরতালে একজনসহ গত দু’দিনে মোট ১৭ জন হেফাজত কর্মী নিহত, পাঁচ শতাধিক আহত ও দুই শতাধিক কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ জন্য নিহত ও আহতদের জন্য সোমবার সারাদেশে দোয়া কর্মসূচি এবং হামলার প্রতিবাদে আগামী ২ এপ্রিল শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
রোববারের হরতালে বেশিরভাগ দোকানপাটই বন্ধ ছিল। অলিগলিতে কিছু দোকান খোলা রাখা হয়। রাজধানীতে অল্প সংখ্যক গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা যায়। তবে যাত্রী সংখ্যা ছিল খুবই কম। রাজধানীর পল্টন, যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-খুলনাসহ বিভিন্ন সড়কে হেফাজতের কর্মীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরেও হরতাল করে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করতে দেখা যায় তাদের। কয়েকটি স্থানে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ বিভিন্নস্থানে হরতাল বিরোধী মিছিল বের করে। এ সময় কয়েকটি স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সাথে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের সাইনবোর্ডে সংঘর্ষে একজন হেফাজত কর্মী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জে পুলিশের গুলিতে বর্ষিয়ান রাজনীতিক হেফাজতের নায়েবে আমির ও মধুপুরের পীর আল্লামা আবদুল হামিদসহ সারাদেশে বেশকিছু নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুরুতর আহত আল্লামা আব্দুল হামিদকে ঢাকার কাকরাইলস্থ ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সারাদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশকিছু নেতা-কর্মীকে।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছিল হেফাজতে ইসলাম। গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় পুলিশের সাথে হেফাজতের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে মোট পাঁচজন নিহত হয়। এর প্রতিবাদে ২৭ মার্চ বিক্ষোভ ও রোববার সারাদেশে হরতাল পালন করে হেফাজত। রোববার দিনের শুরু থেকেই মাঠে সক্রিয় ছিল হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। বাঁশের লাঠি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয় তারা।