‘যুক্তরাজ্যের উচিত ইসলামোফোবিয়াকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান’

২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল রাতের ঘটনা। জনৈক অবসরপ্রাপ্ত বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি মোহাম্মদ সলিম (৮২) ব্রিটেনের বার্মিংহামের উপকন্ঠ স্মল হীথ এলাকায় তাদের স্থানীয় সমজিদে নামাজ আদায় করে বাসার দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এই অশীতিপর বৃদ্ধ হাঁটার জন্য একটি লাঠি ব্যবহার করেন। হঠাৎ পাভলো লেপশিন নামে ২৫ বছরের পিএইচডি পড়–য়া এক ইউক্রেনীয় যুবক ছুরি নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। সে বৃদ্ধ মোহাম্মদ সলিমের পিঠে উপর্যুপরি তিন বার ছুরিকাঘাত করে। হান্টিং নাইফ অর্থাৎ শিকারীর ছুরির আঘাতে বৃদ্ধের শরীর এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায়। নির্মম ভাবে নিহত হন মোহাম্মদ সলিম।
‘হোয়াইট সুপ্রেম্যাসিস্ট’ অর্থাৎ ‘শ্বেতাঙ্গ অধিপত্যবাদী’ লেপশিন স্বীকার করে যে, ঐ বছর জুন ও জুলাই মাসে সে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস-এর তিনটি মসজিদের বাইরে বোমা পুঁতে রাখে। তার লক্ষ্য শুক্রবারের জুমা নামাজের জামায়েত। লেপশিন জানায়, বর্ণবাদী বিরোধ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সে এমনটি করে।
পাভলো লেপশিনকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ১৮৮৩ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন এবং ২০০৬ সালের সন্ত্রাসবাদ আইনের অধীনে আনীত সকল অপরাধ সে স্বীকার করে। সে এখন যুক্তরাজ্যের একটি কারাগারে কমপক্ষে ৪০ বছরের কারাদন্ড ভোগ করছে।
লক্ষনীয় যে, লেপশিন একটি ওয়ার্ক ভিসায় যুক্তরাজ্যে আগমনের ঠিক ৫ দিন পর এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। ঘটনাটি ব্রিটেনের মুসলিম কমিউনিটিকে অত্যন্ত শোকাহত করে। ৫ সহস্রাধিক লোক মোহাম্মদ সলিমের জানাজায় অংশগ্রহন করেন।
নিহত মোহাম্মদ সলিমের মেয়ে মাজসালিম বলেন, ইসলামোফোবিয়া যে একটি বিপজ্জনক বিষয় এর স্বীকৃতির জন্য আরো অনেক কিছু করা প্রয়োজন। তিনি ইসলামোফোবিয়াকে একটি অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ইসলামোফোবিয়া একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিদ্বেষী ব্যক্তিরা সরকার অনুমোদিত নীতিমালায় সাহসী হয়ে তাদের ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক অপকর্ম সংঘটন করছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, দেশে ইসলামোফোবিয়ার যদি একটি ব্যাখ্যা না থাকে তবে আমরা কীভাবে ইসলামোফোবিয়ার উত্থান মোকাবেলা করবো?

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button