ক্ষুব্ধ পরিবার আদালতের শরণাপন্ন
ব্রিটেনে মুসলিম পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে শুকরের মাংস সরবরাহ
একটি ব্রিটিশ পাকিস্তানি মুসলিম পরিবারকে হোটেল কোয়ারেন্টিনে শুকরের মাংস দিয়ে তৈরি বার্গার খেতে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাজ্যে এসে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় তাদেরকে খাবার হিসেবে এধরণের বার্গার দেয়া হয়। এতে ঐ পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। মুসলিম পরিবারটির অভিযোগ, তারা হোটেলকে ৪ হাজার ২৫ পাউন্ড পরিশোধ করেন। কিন্তু হোটেল থেকে তাদেরকে এমন খাবার খেতে দেয়া হয়, যা তারা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তারা খেতে অপারগ। অন্যান্য পরিবার জানান, পানির জন্য তাদেরকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। তাদের আইনজীবীরা এটাকে নৈতিক দিক দিয়ে অগ্রহণযোগ্য এবং সরাসরি বেআইনি বলে উল্লেখ করেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলমান মহামারীর বিধিনিষেধের মধ্যে তারা যুক্তরাজ্যে আসেন। তারা তথাকথিত লাল তালিকাভুক্ত দেশ ভ্রমণ করেন। এদের মধ্যে বর্তমানে ৫০ ব্যক্তিকে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে।
মুসলিম পরিবারটি জানান, যখন তাদেরকে শুকরের মাংস ও শূকরের মাংসের বার্গারের পরিবর্তে অন্য খাবার দেয়া হয়, দেখা যায় সেসব খাবার পঁচা-বাসি এবং পাথরের মত শক্ত।
পরিবারের মাতা নাহিদ খান বলেন, জবরদস্তিমূলকভাবে হোটেলে অবস্থান দুঃস্বপ্নের মতো।খাবারের অবস্থা ভয়াবহ। এগুলো যেমন ঠান্ডা তেমনি স্বাদহীন এবং খাওয়ার অযোগ্য। তারা আমাদের শুকরের মাংসের বার্গার ও পেনিনিস দেয় খাওয়ার জন্য ।কিন্তু এগুলো আমরা খেতে পারিনি কারণ আমরা মুসলিম। বাচ্চারা শুধু সিরিয়েল ও ক্রিসপ খাচ্ছিলো।
তিনি আরো বলেন, চেয়ার দেয়া হয়েছিলো একটি ।ফলে খেতে হচ্ছিলো বিছানায় বসে গাদাগাদি করে। তিন/চারদিন পর বিছানার চাদর বদলে দেয়ার জন্য ডেকে আনতে হয়েছিলো। আমাদের অন্য কোনো উপায় ছিলো না।বাধ্য হয়ে এভাবেই শুতে হয়েছিলো। এটা আসলেই বিরক্তিকর।
তিনি বলেন, হোটেলে আসার পর অনুরোধ জানালে কার পার্কে তাদের শরীরচর্চা করতে দেয়া হবে বলা হয়েছিলো, কিন্তু তাদের তা করতে দেয়া হয়নি। এতে তাদের ১০ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হয়। এমনকি ঘরের জানালা পর্যন্ত তারা খুলতে পারেননি। মানুষের মতো আচরণ করা হয়নি তাদের সাথে। গত সপ্তাহে পরিবারটির পক্ষে আইনজীবীরা হাইকোর্টে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি দাবি দায়ের করেন।
শুক্রবার বিচারক মিসেস ল্যাং সোমবারের মধ্যে জরুরিভাবে এসব অবস্থা পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু আদেশ প্রতিপালিত হয়নি। বিচারপতি হেনশো বলেন, আদালত সন্তুষ্ট নয় কারণ বিচারপতি মিসেস ল্যাংয়ের আদেশ প্রতিপালিত হয়নি। পরিস্থিতি অন্যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।