‘সরকার কমিউনিটিগুলোকে বিভক্ত করতে সাংস্কৃতিক যুদ্ধ শুরু করেছে’
সরকার কমিউনিটিগুলোকে বিভক্ত করার লক্ষ্যে মার্কিন স্টাইলের ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে এবং লেবার পার্টি অবশ্যই এই উত্তেজক বাগাড়ম্বরে সম্পৃক্ত হবে না। লেবার পার্টির জনৈক এমপি সম্প্রতি এই মর্মে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। ব্রিটেনের কভেন্ট্রি সাউথ-এর জনপ্রতিনিধি জারা সুলতানা বর্ণবাদ অস্বীকৃতির জন্য মন্ত্রীবর্গকে অভিযুক্ত করে বলেন, যুক্তরাজ্যে বর্ণবাদ একটি সমস্যা এবং সারাহ এভারারার্ডের হত্যাকাণ্ড থেকে উদ্ভূত নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা মোকাবেলায় তাদের সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতিসমূহ ফাঁকা অন্তঃসারশূন্য বুলি ছাড়া তেমন কিছুই ছিলো না।
এমপি সুলতানা আরো বলেন, যুক্তরাজ্য সরকার একটি তথাকথিত সাংস্কৃতিক যুদ্ধ উস্কে দিচ্ছে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, যা সাম্প্রতিক মার্কিন রাজনৈতিক বাদানুবাদের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি তীব্রভাবে সমালোচিত জাতিগত প্রতিবেদনের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে সুলতানা এসব মন্তব্য করেন।
জাতিগত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ব্রিটেন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটি বর্ণবাদী দেশ নয়। নারী ও সমতা বিষয়ক মন্ত্রী লিজ ট্রাস সম্প্রতি ঘোষণা করেন যে ,মন্ত্রীরা জাতিগত ও লিঙ্গ বিষয়ক ফ্যাশনেবল ইস্যুসমূহ থেকে যুক্তরাজ্যের সমতা বিষয়ক আলোচ্য বিষয়গুলোকে সরিয়ে নেবেন।
মিস সুলতানা আরো বলেন, যখন ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’ বিষয়টির দিকে কেউ লক্ষ্য করবেন দেখবেন এটা মানবাধিকার বিষয়ক, এটা বর্ণবাদ বিষয়ক এবং এটা ট্রানস্ফোবিয়া বিষয়ক। এতে প্রান্তিক কমিউনিটিসমূহের বিষয় সম্পৃক্ত। এখানে মর্যাদা, শ্রদ্ধা ও মানবাধিকার নিয়ে তাদের বসবাসের বিষয়টি জড়িত। সরকার সম্প্রদায়গুলোকে বিভক্ত করতে এটা ব্যবহার করছে। সমতার প্রশ্নে লেবারপার্টি নিরাপোষ। এসবই সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়,যা লেবার পার্টির ডিএনএতে বিদ্যমান। রাজনীতিবিদরা রক্ষণশীল দল কর্তৃক সকল নির্বাচনে ফটো আইডি আবশ্যকীয় করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই নয়।
তারা সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ শ্রমিক শ্রেণী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভোটারদের অবদমিত করবে, পরিসংখ্যান অনুযায়ী যারা সাধারণত লেবার পার্টিকেই ভোট দিয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যের প্রায় ৩৫ লাখ নাগরিকের ফটো আইডি, কোন পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
লেবার পার্টির এমপি আরো বলেন, সরকারের কথিত সাংস্কৃতিক যুদ্ধের বাগাড়ম্বর তার নিজেকেসহ নারী এমপিদের উপর নিপীড়ন বৃদ্ধি করছে, এতে নিপীড়নের ইন্ধন যোগাচ্ছে। তিনি বলেন, বরিস জনসন হিজাবপরা মুসলিম নারীদের লেটার বক্সের সাথে তুলনা করার পর ইসলামফোবিয়ার ঘটনা সপ্তাহে প্রায় ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। মিস সুলতানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বর্ণবাদী নিপীড়নের শিকার। এমনকি হাতে লেখা চিঠি পাঠিয়ে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে এবং তিনি একজন ‘ব্রিটিশ নন’ ‘ইসলামী সন্ত্রাসী’ বলে তাকে ট্রল করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি ইউএন উইমেন-এর জরীপের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাজ্যের ৯৭ শতাংশ তরুণী নারী যৌন হয়রানির শিকার এবং ৮০ শতাংশ নারী জনসমাগমের স্থানে যৌন হয়রানির শিকার।