করোনাক্রান্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে সেবা প্রদানকারী নার্সের পদত্যাগ

করোনায় আক্রান্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সেবা করেছিলেন, এমন একজন নার্স পদত্যাগ করেছেন। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএস- এর প্রতি সরকারের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের ঘাটতির অভিযোগে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

জেনি ম্যাকগী নামক এই নার্স করোনায় আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর শয্যাপাশে ছিলেন দু’দিন। বরিস জনসন তখন ইনটেনসিভ কেয়ারে ছিলেন। এনএইচএস স্টাফদের বেতন ১ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারী প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে ম্যাকগী বলেন, আমাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না এবং যে বেতন পাওয়ার কথা তা পাচ্ছি না। তাই আমি পদত্যাগ করছি। তিনি ১ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিকে ‘দাঁতে লাথি মারার’ শামিল বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি সরকারের মহামারি সংকট মোকাবেলার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, প্রচুর সংখ্যক নার্স মনে করেন যে, সরকার কার্যকরভাবে কভিড মোকাবেলা করেনি। সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় বিষয়টি লক্ষণীয়। অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এটা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক।
ম্যাকগী গত বছর ক্রিসমাস পর্যন্ত পরিস্থিতির কথা স্মরণ করেন, যখন সরকার কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলো নতুন বিধি-নিষেধ আরোপের বিষয়ে দ্রুত কাজ না করার জন্য। অথচ পরিসংখ্যান বলেছিলো যে, ঐ সময় গৃহীত পদক্ষেপগুলো জনগনকে মেলামেশায় নিবৃত্তি করতে পারেনি, যেভাবে মার্চের লকডাউনে করতে সক্ষম হয়েছে।
নিউজিল্যান্ড থেকে আগত এবং লন্ডনের সেন্ট থমাস হসপিটালের ইনটেনসিভ কেয়ারের প্রধান নার্স ম্যাকগী করোনা আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে কীভাবে দেখেছেন, তা বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে তখন অসংখ্য রোগী, অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিলেন। আমার মনে আছে, আমি তাকে দেখছিলাম এবং ভাবছিলাম, তার অবস্থা খারাপ, অত্যন্ত খারাপ দেখাচ্ছে। আসলেই তার শরীরের রঙ বদলে গিয়েছিলো। সারারাত প্রতি সেকেন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে পর্যবেক্ষণে রাখেন ম্যাকগী ও তার সহযোগী নার্স লুইস পিটারমা। এতে ম্যাকগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল ভোরে।
যুক্তরাজ্যব্যাপী রয়াল কলেজ অব নার্সিং (আরসিএন) কর্তৃক পরিচালিত এক সমীক্ষায় ৭৩ শতাংশ অর্থাৎ ৪২ হাজার নার্স বলেছেন, বেতন বাড়ানো হলে তারা নিজেদের অধিকতর মূল্যবান বিবেচনা করবেন। ব্রিটেনের এনএইচএস এবং স্বাধীন সেক্টরগুলোতে চাকুরী ছাড়ার কথা ভাবছেন এমন স্টাফদের সংখ্যা ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে এই বৃদ্ধির সংখ্যা ছিলো ২৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button