যুক্তরাজ্যে ১৫০ মিলিয়ন খাবার ফেলে দেয়া হয় প্রতি বছর
ফজলু মিয়া: সরকারের নিকট থেকে ৬ শ’ মিলিয়ন পাউন্ডের ভর্তুকি স্কীমের অর্থ লাভের আশায় সুপার মার্কেটসমূহ, কৃষক ও উৎপাদকের প্রতি বছর খাওয়ার উপযুক্ত খাদ্য উচ্ছষ্ট হিসেবে ফেলে দিতে দেখা যাচ্ছে। অথচ এসব খাবার ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা যায়।
তিনটি কর্মসূচী বর্জ্য অপারেটরদের সরকারী অর্থ প্রদান করা হচ্ছে যারা ফেলে উচ্ছিষ্ট খাদ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে। ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের ৪র্থ কর্মসূচীটি শুরু হবে শরৎকাল থেকে। ফলে বর্জ্য খাতে সরকারের ভর্তুকি দাঁড়াবে ৭৫০ মিলিয়ন পাউন্ড। এসব ভর্তুকি, ৫ বছর আগে যা ছিলো ২ শ’ মিলিয়ন পাউন্ড, এখন এতোই আকর্ষণীয় যে, এডি অপারেটররা অর্থাৎ বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকারী বায়োগ্যাস উৎপাদকরা খাদ্য ব্যবসায়ীদের উচ্ছিষ্ট খাবারের বিনিময়ে অর্থ প্রদান করছে। এর ফলে প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের খাবার উপযুক্ত খাদ্য এডি প্লান্টে প্রেরিত হচ্ছে। অথচ ফুড ফাউন্ডেশন-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই গ্রীষ্মে দেশের ৩০ শতাংশ পিতামাতা তাদের সন্তানদের খাবার দিতে পারবে কি-না, এ দিয়ে উদ্বিগ্ন।
ইতোমধ্যে, খাদ্য পুনঃবন্টনকারীরা যারা উদ্বৃত্ত দ্য ফেলিক্স প্রোজেক্ট, সিটি হারভেস্ট ও ফেয়ারা শয়ার- এর মতো চ্যারিটি বা দাতব্য সংস্থা ও স্কুলসমূহে নিয়ে যায়, তারা কোন সরকারী ভর্তুকী নেয় না এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে, তারা চাঁদা ও তহবিল সংগ্রহের ওপর নির্ভর করে। লন্ডনে উদ্বৃত্ত খাদ্য বিতরণকারী সর্ববৃহৎ প্রকল্প ফেলিক্স ফুড প্রোজেক্ট একটি সামাজিক কিচেন বা রান্নাঘর পরিচালনা করে এবং বছরে ১.৫ মিলিয়ন খাবার বিতরণ করে।
প্রতিষ্ঠানটি বিপুল পরিমান স্বল্প মেয়াদের উদ্বৃত্ত খাবার রূপান্তরের মাধ্যমে এবং বিপুল পরিমান বাণিজ্যিক আকারের ক্যাটারিং প্যাকসমূহকে পুষ্টিকর খাবারে পরিণত করে খাদ্যের অপচয় হ্রাস করে। তবে কথা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটিকে উদ্বৃত্ত খাবারের সরবরাহের ওপর নির্ভর করতে হয়। ইন্ডাষ্ট্রির প্রতিনিধিত্বকারী দ্য অ্যানিরোবিক ডাইজেশন এন্ড বায়োরিসোর্সেজ অ্যাসোসিয়েশন (আদবা) স্বীকার করেছে যে, এডি প্লান্টিসমূহের বিস্তার উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহে রীতিমতো প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছে।
ব্রিটেনের ছায়া পরিবেশ, খাদ্য ও প্রত্যন্ত বিষয়ক মন্ত্রী লিউক পোলার্ড এই মর্মে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন যে, সরকারের ক্ষুধার্ত পরিবারগুলোর নিকট থেকে ভালো খাবার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত নয়।