মানবাধিকার লংঘনকারী দেশসমূহে যুক্তরাজ্যের ১৭ বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রি
মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত খারাপ রেকর্ড রয়েছে এমন তালিকাভুক্ত দেশসমূহের দুই-তৃতীয়াংশ দেশে যুক্তরাজ্য অস্ত্র বিক্রির অনুমতি দিয়েছে বিগত দশকে। সম্প্রতি এক জরীপে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গেছে, ২০১১ এবং ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য মানবাধিকার সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউস’ কর্তৃক সমালোচিত এসব দেশে ১৬.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রির অনুমতি দিয়েছে।
রাজনৈতিক ও মানবাধিকারের দুর্বল রেকর্ড সম্বলিত তালিকাভুক্ত ৫৩ টি দেশের মধ্যে ৩৯ টিতে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে যুক্তরাজ্য। এসব দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশ হচ্ছে লিবিয়া। যুক্তরাজ্য লিবিয়ায় বিক্রি করেছে ৯.৩ মিলিয়ন পাউন্ডের অ্যাসল্ট রাইফেল, সামরিক যানবাহনের যন্ত্রাংশ ও গোলাবারুদ। গত সপ্তাহে লিবিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। লিবিয়ায় প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন ও বিদেশী দেশ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
লন্ডনভিত্তিক ‘ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট আর্মস ট্রেড’ (সিএএটি) বলেছে, দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিজস্ব তালিকায় ‘মানবাধিকারের অগ্রাধিকারের’ দেশসমূহে যুক্তরাজ্য গত এক দশকে ১১.৮ বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রি করেছে। অপরদিকে, নিপীড়ক সরকারের অধীন দেশগুলোর তালিকাভুক্ত ৩০ টি দেশের মধ্যে ২১ টিতে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে।
এছাড়া ‘ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড’ এমন ১০ টি দেশ চিহ্নিত করেছে, যেগুলো অস্ত্র রফতানির মূল মার্কেট, সেগুলোতে মিশর, বাহরাইন, কাতার, সৌদী আরব, থাইল্যান্ড ও তুরস্কসহ মানবাধিকার লংঘনের বহু ঘটনার জন্য দায়ী দেশগুলো রয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকার ইতোমধ্যে স্বীকার করেছে যে, সৌদী কেয়ালিশন অর্থাৎ জোট বাহিনী ইয়েমেনে বোমা বর্ষনের ক্ষেত্রে যে সব যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করছে, এর অর্ধেকেরও বেশী যুক্তরাজ্য কর্তৃক সৌদী আরবে বিক্রিত ও সরবরাহকৃত।
সিএএটি’র এন্ড্রু স্মিথ বলেন, যুক্তরাজ্যের তৈরী অস্ত্রশস্ত্র ইয়েমেনসহ গোটা বিশ্বের যুদ্ধবিগ্রহে বিপর্যয়কর ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে যেসব অস্ত্র বিক্রি চলছে, সেগুলো আগামী দিনগুলোতে বর্বরতা ও নিপীড়নের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে। স্মিথ আরো বলেন, যেখানেই নির্যাতন ও সংঘাত সৃষ্টি হয়, অস্ত্র কোম্পানীগুলো সেখান থেকে সর্বদা ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে এবং সংশ্লিষ্ট সরকার একাজে তাদের সহায়তা করে।