এসাইলাম প্রার্থীদের ফেরত নিতে অস্বীকারকারী দেশকে ভিসা প্রদান বন্ধ করছে যুক্তরাজ্য
যেসব দেশ যুক্তরাজ্যে প্রত্যাখ্যাত এসাইলাম প্রার্থী কিংবা অপরাধীদের ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানাবে সে সব দেশের ভ্রমণকারীদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে যুক্তরাজ্য। গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনের বিষয় প্রকাশ করা হয়। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল কিংবা ভবিষ্যত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই ক্ষমতা থাকবে যে, যে সব দেশ যুক্তরাজ্য সরকারের সাথে অবৈধ ও প্রত্যাখ্যাত এসাইলাম প্রার্থীদের বহিষ্কারে সহযোগিতা করবে না, তারা সেসব দেশের ভ্রমন সংক্রান্ত আবেদন স্থগিত করতে কিংবা প্রক্রিয়াকরণ বিলম্বিত করতে পারবেন।
এছাড়া যে সব দেশ সহযোগিতা করবে না সেসব দেশের ভিসা আবেদনের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক আবশ্যকীয়তা– যেমন ফী বৃদ্ধি আরোপের ক্ষমতা থাকবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। ন্যাশনালিটি এন্ড বর্ডারস বিলের অনুচ্ছেদের অধীনে তারা এ ক্ষমতা পাবেন।
প্রস্তাবিত আইনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের এ সংক্রান্ত আইনের প্রতিফলন রয়েছে, যেখানে ডকুমেন্টবিহীন অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃত দেশসমূহ থেকে ভিসা রুট প্রত্যাহারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের। এটা প্রতীয়মান যে, ইরাক, ইরান, ইরিত্রিয়া ও সুদানের মতো দেশগুলো এসব বিষয়ে যুক্তরাজ্যকে সহযোগিতা করতে অনাগ্রহী।
ক্যাম্পেইনাররা প্রস্তাবিত আইনকে ‘শরণার্থী বিরোধী আইন‘ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, এটা ঐসব লোকজনকে দণ্ডিত করবে, যাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য প্রয়োজন।
রিফিউজি কাউন্সিল কর্তৃক হোম অফিসের ডাটা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯ হাজার লোক যাদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারা যুদ্ধ বা নির্যাতন এড়াতে পালিয়ে এসেছেন এবং বর্তমান আইনের অধীনে যাদেরকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে, নতুন আইনে যুক্তরাজ্যে আর তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে না। কারণ প্রস্তাবিত আইনে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে অবৈধ রুট ব্যবহারকারী আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপের বিধান রাখা হয়েছে।
উক্ত দাতব্য সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ এনভার সলোমন বলেন, যুগ যুগ ধরে লোকজন নির্যাতন থেকে বাঁচতে অস্বাভাবিক পন্থা গ্রহণ করে আসছে। অবশেষে তারা বৃটেনের আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন করছে এবং গর্বিত ব্রিটিশ হিসেবে তাদের কর পরিশোধ করছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর রিফিউজি এন্ড মাইগ্র্যান্টস রাইটস প্রোগ্রামের পরিচালক স্টিভ ভার্লদেজ সিমন্ডস নতুন এই আইন কে ‘আইনি গুন্ডামি‘ বলে আখ্যায়িত করে দাবি করেছেন যে, এটা আশ্রয় অধিকারকে মারাত্মকভাবে খর্ব করবে।